Home আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধে নিউ ইয়র্কের রাজনীতিতে দ্বিধা বিভক্ত

ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধে নিউ ইয়র্কের রাজনীতিতে দ্বিধা বিভক্ত

by bnbanglapress
A+A-
Reset

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধে নিউ ইয়র্কের রাজনীতিবিদদের মধ্যে দেখা দিতেছে দ্বিধা বিভক্ত। গাজায় ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিদের মধ্যে গত শনিবার থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বের দেশে দেশে উভয় পক্ষের সমর্থকরা বিক্ষোভ করছে। যুক্তরাষ্ট্রও এতে পিছিয়ে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সকল বড় সিটিতে প্রবাসী ফিলিস্তিনি ও তাদের সমর্থক এবং ইসরাইলের সমর্থনে ইহুদি ও তাদের পক্ষাবম্বীরা বিক্ষোভ করছে। নিউ ইয়র্ক সিটির টাইমস স্কোয়ারে ফিলিস্তিনপন্থীদের এক বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিভাজনও প্রকটভাবে চোখে পড়ে। ইসরাইলি ভূখন্ডে হামাসের আক্রমণে নিউ ইয়র্কের রাজনৈতিক চিত্র পাল্টে গেছে।
সিটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি নির্বাচনী এলাকার এই বিভাজন দৃশ্যপটে এসেছে- একটি ইহুদি সম্প্রদায়, নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসকারী ইহুদি সংখ্যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং এর প্রতিপক্ষ হচ্ছে একটি নতুন শক্তিশালী বামপন্থী আন্দোলন, যা সিটিতে প্রাধান্য বিস্তার করেছে। সিটির ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট অফ আমেরিকার নিউইয়র্ক চ্যাপ্টার গত রোববার টাইমস স্কোয়ারে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে পৃষ্ঠপোষকতা করায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা ইসরাইলে হামাসের হামলার সাফল্যে উচ্ছাস করছিল এবং তাদের সঙ্গে ছিলেন নিউ ইয়র্কের বামপন্থীরা, যা অনেককে শঙ্কিত করে। নিউ ইয়র্কের বিক্ষুব্ধ ইহুদিরা এর তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। বিক্ষোভ সমাবেশের কয়েক ঘন্টা পর সাবধানে কারণ বামপন্থী গণতান্ত্রিক নেতারা তীব্র চাপের মধ্যে পড়েন। তাদের কয়েকজনকে সতর্ক থাকতে দেখা যায়, যাতে দল তাদের এড়িয়ে না চলে বা বিচ্ছিন্ন করে না দেয়। সোমবারের মধ্যে তারা পরিস্থিতি কিছুটা সামলে নেয় এবং মঙ্গলবারের মধ্যে তারা এমনভাবে বিবৃতি দেয় যেন বিক্ষোভে সমর্থন দিয়ে তারা ভুল করেছেন।
মূলধারার ডেমোক্রেটট এবং সমাজতান্ত্রিক ভাবধারায় অনুপ্রাণিত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষোভের সৃষ্টি করে যে দলগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সিটিগুলোতে রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে চেষ্টা করছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে তারা প্রায়শ নিজেদের মধ্যপন্থী বলে বিবেচনা করা ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক প্রাথমিক প্রচারণা চালায়। নিউইয়র্ক এমন একটি সিটি, যেখানে স্থানীয় নির্বাচনী যুদ্ধেও ইহুদি জনগোষ্ঠীর ভূমিকা অস্বীকার করার সাধ্য কোনো রাজনৈতিক দলেরই নেই। কারণ, এখানে বিশ্বের যে কোনো সিটির চেয়ে বেশি ইহুদি বাস করে। ইহুদি ইস্যুতে নিউ ইয়র্ক ডেমোক্র্যাটদের এক শীর্ষ উপদেষ্টা স্টু লোসার বলেছেন, এটি সত্যিই কঠিন এক পরিস্থিতি। নেতাদের কাছে অনিবার্য প্রশ্ন হতে পারে: “এই সঙ্কট মুহূর্তে আপনি কোন দিকে আছেন।”
রোববার টাইমস স্কোয়ারের বিক্ষোভের ২৪ ঘন্টা পর সিটির অতি পরিচিত ও প্রিয়মুখ গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিবিদ কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, ইসরাইলি হামলাকে উগ্রতা ও নির্মমতা বলে নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, যারা নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে হামাসের ভয়াবহ হামলার নিন্দা করছে, তাদের উচিত ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলি দখলদারিত্বের অধীনে কিভাবে গুরুতর অবিচার সহ্য করছে, সেটিরও নিন্দা করা। কংগ্রেসম্যান প্রতিনিধি জামাল বোম্যান, যিনি ২০২০ সালে গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রীদের সহায়তায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার ইহুদি অধ্যুষিত ওয়েস্টচেস্টার নির্বাচনী ডিস্ট্রিক্ট নিয়ে তিনি নি:সন্দেহে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন, কারণ তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসের সাথে কথা বলতে শক্তভাবে হামাসের হামলার নিন্দা করেননি।
নিউ ইয়র্কের ডেমোক্রেটরা রাষ্ট্র হিসাবে ইসরায়েলকে ব্যাপকভাবে সমর্থন করলেও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সমালোচনার মুখে পড়েছে তারা। ইহুদি সহ অনেক তরুণ বামপন্থী কর্মী ফিলিস্তিনের মুক্তিকে জাতিগত ন্যায়বিচারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হিসাবে দেখে এবং ইসরাইলকে একটি সমৃদ্ধ নিপীড়ক জাতি হিসাবে বিবেচনা করে। দেখেন। অনেক ইহুদি বৃদ্ধ ও যুবক একইভাবে, ইসরাইলেল ডানপন্থী সরকারের তীব্র বিরোধিতা করেছে, কারণ তারা বিশ্বাস করে যে ইসরাইলে নেতানিয়াহু সরকার গণতন্ত্রকে দুর্বল করছে এবং তার সরকার ইহুদি ও ফিলিস্তিনিদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সম্ভাবনাকে দুর্বল করে দিতে পারে। কিন্তু এখন, গাজায় ইসরাইলের ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা এবং পাল্টা আক্রমণের মধ্যে, ইসরায়েলের সমর্থকরা নীতিগত পার্থক্যকে দূরে সরিয়ে রাখতে এবং একক ব্লক হিসাবে একত্রিত হওয়ার জন্য আক্রমণাত্মকভাবে সেই সমস্ত গোষ্ঠীকে চাপ দিচ্ছে।
এ ভয়াবহ মুহূর্তে ইসরাইলকে সমর্থন করার জন্য গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে ইহুদিদের পক্ষ থেকে। ্য গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রীরা কি সিদ্ধান্ত নেবে তা দেখার বিষয়। কারণ সিটির ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ট দুটি নির্বাচনী এলাকায় তাদের সমর্থন ছাড়া কোনো প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে জয়ী হওয়া দুরাশা মাত্র।

বিপি।এসএম

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী