মিনারা হেলেন: যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ অন্তত একটি বা একাধিক পিস্তল-রিভলবার কিংবা বন্দুকের মালিক। সাধারণ জনগণের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহে রাখার ঝোঁক বাড়ছে। শতকরা হিসেবে সাধারণ জনগণের মধ্যে বন্দুকধারী বা মালিকদের এই হার দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। দিন দিন আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকের সংখ্যা আরও বাড়ছে বলে মার্কিন সংবাদমাধম এনবিসি পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপ পর্যালোচনা করে জানা গেছে।
সাধারণ মার্কিনিদের মধ্যে বন্দুকধারীদের হার বৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে গত এক দশক ধরে। ২০১৩ সালের এক সরকারি জরিপে দেখা গিয়েছিল, মোট জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ একটি বা একাধিক আগ্নেয়াস্ত্রের মালিক। কিন্তু তার ৬ বছর পর ২০১৯ সালের জরিপে দেখা যায়, সাধারণ মার্কিনিদের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকের হার পৌঁছেছে ৪৯ শতাংশে। বর্তমানে দেশটিতে আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকের যে হার, তা দেশটির এযাবৎকালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং রিপাবলিকান পার্টি। রিপাবলিকান পার্টির সমর্থকদের মধ্যে অস্ত্র রাখার প্রবণতা বেশি। এনবিসির জরিপে যারা নিজেদের কাছে বা নিজেদের বাসাবাড়িতে অন্তত একটি বন্দুক রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন, তাদের দুই তৃতীংশই রিপাবলিকান পার্টির সমর্থক।
জরিপে আরো জানা গেছে, তুলনামূলকভাবে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে বাড়ছে বন্দুক রাখার প্রবণতা। ২০১৯ সালে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের ২৪ শতাংশ আগ্নেয়াস্ত্রের মালিক ছিলেন। বর্তমানে সেই হার পৌঁছেছে ৪১ শতাংশে।
জরিপে অংশ নেয়াদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা নিজেদের সাথে বা বাসাবাড়িতে বন্দুক রাখেন ব্যক্তিগত নিরাপত্তাগত স্বার্থে। বাকি ১২ শতাংশের একটি অংশ জানিয়েছেন, তারা অস্ত্র কিনেছেন শখের কারণে; অপর একটি অংশ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
চলতি বছরের শুরুর দিকে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক একটি সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ পর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারের ওপর জরিপ চালিয়েছিল। সেই জরিপে দেখা গিয়েছিল, বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকের সংখ্যা অনেক বেশি। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বন্দুক সহিংসতাও সবচেয়ে বেশি এই দেশটিতে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে নির্বিচার বন্দুক হামলার (মাস শুটিং) ঘটনাই ঘটেছে ৬০৯টি। এর বাইরে অন্যান্য বন্দুক সহিংসতাও ঘটেছে শত শত। যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইনে কোনো গোলাগুলির ঘটনায় যদি ন্যূনতম চারজন নিহত কিংবা আহত হন, তাহলে তাকে ‘নির্বিচার বন্দুক হামলা’ বলা হয়।
বিপি।এসএম