ফরিদপুর থেকে সংবাদদাতা : ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের চতুল গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল ইসলাম হত্যাকাÐের সাত বছর পেরিয়ে গেলেও আজও বিচার কাজ শেষ হয়নি, এতে হতাশায় ভুগছে নিহতের পরিবারটি। বিচার বিভাগের প্রতি শোকাহত পরিবারের আর্তি দ্রততম সময়ে এ হত্যাকান্ডের বিচার শেষ করে প্রকৃত দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার।
মামলার বাদী নিহতের ভাই এস এমখায়রুল ইসলাম জানান, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর বেলা তিনটার দিকে শিক্ষক কামরুল ইসলাম সাইকেল যোগে বোয়ালমারী বাজারে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে চতুলের চিতাঘাটা নামক স্থানে পৌঁছালে একদল দূর্বৃত্তরা অর্তকিতভাবে হামলা চালায়। পুর্ব পরিকল্পিতভাবে ১৪-১৫ জন হামলা চালিয়ে প্রকাশ্যে বেধড়ক মারপিট করে গুরুত্বর জখম করে। অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তবরত ডা. উন্নত চিকিৎসার জন্য গুরুত্বর জখম বিবেচনায় ফরিদপুরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। ফমেকে নেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে সেখানে নেয়ার পথে রাত পৌনে দশটার দিকে মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরদিন ২৬ নভেম্বর বোয়ালমারী থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও চার-পাঁচ জনকে আসামি করে মামলা দয়েরে করা হয়।
তিনি জানান, এঘটনায় পুলিশ ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলে বিচার কাজ শুরু হলেও এরই মধ্যে সাত বছর পেরিয়ে গেলেও বিচারকাজ শেষ হয়নি আজও। আসামিরা জামিন নিয়ে এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি সামজিক চাপ সৃষ্টি করছে। নানাভাবে সামাজিকভাবে চাপের মধ্যে আছি। তিনি দ্রæত বিচার কাজ শেষ করার দাবি জানান বিচার বিভাগের প্রতি। নিহতের বৃদ্ধ মা লাইলি বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, পুত্র শোক সইত না পেরে একবছরের মধ্যে মারা গেছেন বাবা হাজী আবুল হাসেম মাস্টার। মৃত্যুর আগে সন্তান হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে চান শোকার্ত এই মা। তিনি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। নিহতের স্ত্রী তানজিলা খানম জানান, স্বামীর হত্যাকারীদের চোখের সামনে দিয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়ানো ও কটু কথা সইতে না পেরে স্বামীর বাড়ি ছেড়েছি। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি, ন্যায় বিচার যেনো প্রতিষ্ঠিত হয়।
নিহতের বোন, তাসলিমা আক্তার ও মামলার বাদীর স্ত্রী (নিহতের ভাইয়ের স্ত্রী) সোনিয়া সুমি দাবী করেন, আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় উকিল নিয়োগ দেয়াও সম্ভব হয়নি, বর্তমানে অতিরিক্ত সরকারী কৌসুলী এম. এ. সালাম মামলাটি পরিচালনা করছেন। তারা এ হত্যাকাÐের বিচার দ্রæততম সময়ে শেষ করাসহ দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। এ ব্যাপারে ফরিদপুর জজকোর্টের অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলী এম. এ. সালাম আশ্বস্ত করে জানান, মামলাটি সাক্ষী শেষে প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে রায় ঘোষণা হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিপি/আর এল