এম আর আলী টুটুল, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : দীর্ঘ দিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন । ঘটনা আড়াল করতে এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজ ঘরসহ প্রতিপক্ষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ১৮ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের কয়া গোলাহাট পশ্চিম পাড়ায়।
আহতদের সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই এলাকার মৃত.আলহাজ্ব মকবুল হোসেনের ছেলে মোখলেছুর রহমান বলেন, প্রতিবেশী মৃত. অফর উদ্দিনের ছেলে নুরুল হকের সাথে দীর্ঘ দিন থেকে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। নুরুল হক সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে গায়ের জোড়ে আমাদের পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমি তার বলে দাবি করে আসছে। এনিয়ে ২০১৩,২০১৬ ও ২০১৭সাল থেকেই বিভিন্ন সময় হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় ও আদালতে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা চলে আসছে। এসব মামলার বেশিরভাগই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারায় আমাদের পক্ষে রায় আসে। কিন্তু তারা গায়ের জোড়ে এখনও জমি দখল করে রেখেছে। উল্লেখ্য যে নুরুল হকের বাপ,দাদাসহ ওয়ারিশগন তাদের জমি বিক্রি করেন। ওই সব জমি আমরাসহ আমাদের অভিভাবকরা ক্রয় করি। কিন্তু তারা এসব আমলে না নিয়ে অন্যায় দাবী করে সব সময় মামলা ও হামলার ভয় দেখায়। সংখ্যায় তারা বেশী হওয়ায় তাদের সাথে পেরে উঠতে পারি না। তিনি আরো বলেন, এঘটনা নিয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারী সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিরোধপূর্ণ জমিতে রায়ের প্রেক্ষিতে চাষাবাদ করার জন্য আমাদের নির্দেশ দেয়া হয়।
সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে আমরা জমিতে পানি সেচের জন্য ড্রেন করতে যাই। এসময় প্রতিপক্ষের নুরুল হক,নজরুল,আনিছুর রহমান,মিজানুর রহমান,ওবায়দুল,রোস্তম আলী,আকবার আলী,রবিউল,মতিয়ার রহমান,রহিমা,আবেদা, শিরিনসহ অজ্ঞাত আরো ৫০/৬০ সংঘবদ্ধভাবে দলেবলে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের পরিবারের ৭ জন গুরুত্বরভাবে আহত হয়। আহতরা হলেন, মাসুদের স্ত্রী মনি,(২৫), সেকেন্দারের স্ত্রী মকছেদা বেগম (৫৫), ছেলে মাসুদ (৩৫), মামুন (৩২), মজিবরের স্ত্রী উম্মে কুলসুম (৫৭), মোখলেছুরের স্ত্রী শেফালী বেগম (৫৫), মতিয়ারের স্ত্রী মিষ্টি (৪০)। আহতরা সকলেই সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীনআহতদের নিয়ে ব্যস্ত থাকার সুযোগে তারা আমাদের একটি ঘরে(খড়ের গাদায়) আগুন লাগিয়ে দেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, জমি আমাদের জোড় পূর্বক দখল করে ঘর তৈরি করেছে নুরুল। প্রশাসন নির্দেশ দিলেও তারা দখল ছাড়ছেনা। সকালে জমিতে ড্রেন করতে গেলে সংঘবদ্ধ আক্রমন করে আহত করেছে আমাদের লোকজনকে। অথচ এই ঘটনা আড়াল করতে তারা কিছু দিন আগে রাতের আধারে আমাদের জমির সরিষা ক্ষেত নষ্ট করে ওই জমিতে টিনের চালা দিয়ে ঘর তৈরি করে। ঘটনার সময় তারা ওই ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং আমাদের দায়ি করে আবারও মামলায় ফাঁসাতে চাচ্ছে।
এ ব্যাপারে মৃত অফর উদ্দিনের ছেলে নুরুল হক বলেন, পৈত্রিক সূত্রে জমির মালিক আমরা। জমিতে জোড় পূর্বক ড্রেন করতে আসলে আমরা বাঁধা দিলে তারা আমাদেরকে মার ডাং করে এবং বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে ৩ জন আহত হয় । আহতরা সবাই সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
সৈয়দপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার খুরশিদ আলম জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু আগুনের সূত্রপাত কিভাবে তা জানাা যায়নি। সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খান বলেন, এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।