বাংলাপ্রেস ডেস্ক: সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমানো হয়েছে। যত বেশি বিনিয়োগ, মুনাফার হার হবে তত কম। তবে, ১৫ লাখ টাকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার একই থাকছে।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। উপ-সচিব দীপক কুমার বিশ্বাস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বেশকিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যারা নতুন করে সঞ্চয়পত্র কিনবেন, শুধু তাদের জন্য পরিবর্তিত এ হার কার্যকর হবে। আগের কেনা সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেটি পুনঃবিনিয়োগ করলে তখন নতুন মুনাফার হার কার্যকর হবে। ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয় ক্ষেত্রে এই মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বর্তমানে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যায়। নতুন নিয়মে যাদের এই সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ আছে, তারা মেয়াদ শেষে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে। ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ থাকলে মুনাফার হার হবে সাড়ে ৯ শতাংশ।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে বর্তমানে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। সেটি এখন ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কমিয়ে করা হয়েছে ১০ শতাংশ। এই সঞ্চয়পত্রে যাদের বিনিয়োগ ৩০ লাখ টাকার বেশি, তারা মেয়াদ শেষে মুনাফা পাবেন ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে।
অবসরভোগীদের জন্য নির্ধারিত পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে এতদিন ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যেত। এখন এই সঞ্চয়পত্রে যাদের বিনিয়োগ ১৫ লাখ টাকার বেশি তারা মেয়াদ শেষে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে। ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ থাকলে এই হার হবে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
সবচেয়ে জনপ্রিয় পরিবার সঞ্চয়পত্র। পাঁচ বছর মেয়াদি এই সঞ্চয়পত্রে মেয়াদ শেষে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এখন এই সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার কমিয়ে করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ হার ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবে বর্তমানে মুনাফা ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। এতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে তিন বছর মেয়াদি হিসাবে বর্তমানে মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। এখন ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার হবে ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ। ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে হবে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।
প্রজ্ঞাপনে শর্তের বিষয়ে বলা হয়েছে, এ আদেশ জারির আগে কেনা সঞ্চয় স্কিম ক্রয়কালীন হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে এবং যে মেয়াদের জন্য তা ইস্যু করা হয়েছিল, সে মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত উক্ত হারে মুনাফা পাপ্য হবে। তবে, পুনঃবিনিয়োগের ক্ষেত্রে পুনঃনিনিয়োগের তারিখের মুনাফার হার প্রযোজ্য হবে।
আরও বলা হয়েছে, সব সঞ্চয় স্কিমের ক্রমপুঞ্জীভূত বিনিয়োগ বিবেচনা করে প্রযোজ্য হারে মুনাফা পাপ্য হবে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও পুনঃনির্ধারিত মুনাফা হার কার্যকর হবে। এ আদেশ জারির পরে বিনিয়োকৃত অর্থের মুনাফা দেওয়ার ক্ষেত্রে আগের বিনিয়োগ বিবেচনায় নিয়ে প্রযোজ্য হারে মুনাফা পাপ্য হবে।
এছাড়া, প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যৌথভাবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রত্যেক বিনিযোগকারীর বর্ণিত সব সঞ্চয় স্কিমে মোট বিনিয়োগের ওপর হিসাব করে প্রযোজ্য হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে। যৌথ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর ক্রমপুঞ্জীভূত বিনিয়োগের পরিমাণ পৃথকভাবে হিসাব করে প্রযোজ্য হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে। সব সঞ্চয় স্কিমের মুনাফা/সুদ সরল হারে প্রদেয় হবে।
বিপি/কেজে