নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীর মাধবদীতে যাত্রীবেশে অটোরিকশা চালক অন্তর মিয়াকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করার ঘটনায় আন্তজেলা ছিনতাইকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার রাতে জেলার শিবপুর উপজেলা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুরে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহ্নত লোহার রড, গামছা ও ছিনতাইকৃত অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন আল আমিন (৩৬), বকুল মিয়া (৪৫), অহিদুল ইসলাম মাতাব্বর, ছগির (৩১) ও সাজ্জাদ (৩২)। সোমবার দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী
হত্যাকাণ্ডের শিকার কিশোর অন্তর মিয়া নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীর খিলগাঁও এলাকার মো. কামাল হোসেনের ছেলে। নিখোঁজ হওয়ার আগে অসুস্থ বাবার ইজিবাইক নিয়ে উপার্জনের জন্য সড়কে নেমেছিল অন্তর।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বুধবার দুপুরে অন্তর অটোরিকশা নিয়ে উপার্জনের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। রাত ৮টা পর্যন্ত তাকে অটোরিকশা চালাতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু রাতে সে আর বাড়ি ফেরেনি। এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। পরে না পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মাধবদী থানায় একটি জিডি করে তার পরিবার। পরে বিকেলে মাধবদী থানার বালাপুরের দরগাকান্দা গ্রামের একটি ডোবায় লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন অন্তরের লাশ শনাক্ত করেন। পরে মাধবদী থানার পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালর মর্গে পাঠায়। এরপরই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উৎঘাটনে তদন্তে নামে জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার সন্ধ্যায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জেলার শিবপুর উপজেলা থেকে অহিদুল ইসলাম মাতাব্বরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুরে অভিযান পরিচালনা করে আল আমিন, বকুল, ছগির ও সাজ্জাদকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার রড, গামছা ও ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অন্তরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন থানা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছে। তারা সবাই অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের সদস্য। তারা নিয়মিত দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবেশে অটোরিকশা ছিনতাই করে। তারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ছিনতাই করে থাকে। বুধবার রাতে তারা অন্তরের অটোরিকশাটি বালাপুরের একটি ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার কথা বলে ৪শ টাকায় ভাড়া নিয়েছিলো। অন্তর তাদের নিয়ে যাওয়ার সময় নির্জন এলাকা দেখে তাকে চেতনানাশক দিয়ে অচেতন করে। পরে তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে মেরে গামছা দিয়ে হাত-পা বেঁধে ডোবায় ফেলে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই ও হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাদেরকে আজ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে। আর আন্তজেলা ছিনতাই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে আমরা কাজ করছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
বিপি/কেজে