১৪ অক্টোবর ২০২৫

১৫ বছর পর সম্মেলন ঘিরে নেতা–কর্মীরা সরব, শীর্ষ দুই পদে ১২ প্রার্থী

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
১৫ বছর পর সম্মেলন ঘিরে নেতা–কর্মীরা সরব, শীর্ষ দুই পদে ১২ প্রার্থী
বাংলাপ্রেস ডেস্ক:  দীর্ঘ ১৫ বছর পর নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ আগস্ট। সম্মেলন ঘিরে নেতা–কর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ কারা পাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন। পদপ্রত্যাশী নেতারা ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছেন। অনেকে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ করছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বশীল নেতাদের এক সভায় ১১ আগস্ট নওগাঁ জেলা বিএনপির সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সম্মেলনের ঘোষণা আসার পরই সরব হয়েছেন জেলা বিএনপির নেতা–কর্মীরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শহরের কেডির মোড়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে নেতা–কর্মীদের জটলা দেখা যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক—এই তিনটি পদে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। এ উপলক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত রোববার নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গতকাল সোমবার জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক—এই তিনটি পদপ্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। একই দিনে মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই ও চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। সম্মেলন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা বলেন, সভাপতি পদে আটজন, সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন এবং সাংগঠনিক সম্পাদকের দুটি পদের জন্য আটজন মনোনয়নপত্র তুলেছেন। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে এই তিনটি পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া দলের স্থায়ী কমিটি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলন সফল করার জন্য ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
নতুন কমিটিতে সভাপতি পদপ্রত্যাশীরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাছান, পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুস শুকুর, জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ এস এম মামুনুর রহমান ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এ বি এম আমিনুর রহমান।
সর্বশেষ ২০১০ সালে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন মামুনুর রহমান। ২০১৫ সালে ওই কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর সম্মেলনের মাধ্যমে আর কোনো কমিটি গঠন হয়নি। সর্বশেষ ২০২২ সালে গঠিত আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। দীর্ঘদিন পর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করায় নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন বলে জানালেন নওগাঁ পৌর বিএনপির সভাপতি শেখ মিজানুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নেতা–কর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দলীয় কার্যালয় ও মোড়ে মোড়ে এসব নিয়েই আলোচনা চলছে। সমঝোতা করে কমিটি করতে পারলে ভালো হতো। তবে যেহেতু সমঝোতা করা যায়নি, তাই ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হচ্ছে। এ ধরনের গণতান্ত্রিক চর্চা থাকা ভালো। সবচেয়ে বড় কথা সম্মেলন হচ্ছে এতেই আমরা খুশি।’
সভাপতি প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সব আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। সর্বশেষ দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে আমি ভোটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলাম। এবারও আমি আশাবাদী, কাউন্সিলররা ভোটের মাধ্যমে আমাকে বিজয়ী করবেন।’ আরেক সভাপতি প্রার্থী নজমুল হক বলেন, ‘বিএনপি যে একটি গণতান্ত্রিক দল, এই নির্বাচনই তার প্রমাণ। নেতা-কর্মীরা প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে তাঁদের নেতা নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রতিকূল পরিবেশেও আমি তিনবার নওগাঁ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। সব সময় দলের নেতা–কর্মীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সভাপতি প্রার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনে হারজিত মেনেই আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আশা করি, জয়ী–পরাজিত সবাইকে নিয়েই চলতে হবে।’
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মামুনুর রহমান বলেন, জেলা বিএনপির নেতা–কর্মীরা চান নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হোক। সেই জায়গা থেকে তিনি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন। আশা করছেন, কাউন্সিলররা দলের প্রতি প্রার্থীদের ত্যাগ-তিতিক্ষা বিবেচনা করে তাঁদের নেতা নির্বাচিত করবেন। আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বায়েজিদ হোসেন বলেন, ‘সদস্যসচিবের দায়িত্ব পাওয়ার পর নওগাঁ জেলা বিএনপিকে একটি শক্তিশালী ইউনিটে পরিণত করেছি। ইউনিয়ন থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সব কমিটি গণতান্ত্রিক উপায়ে গঠন করা হয়েছে। সাংগঠনিক কার্যক্রম এবং বিগত হাসিনা শাসনামলে জেলজুলুমের ইতিহাস বিবেচনা করে আশা করি সম্মানিত কাউন্সিলররা আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করবেন।’ [বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।] বিপি>টিডি
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন