১৩ অক্টোবর ২০২৫

৬০ কোটির লটারি জিতলেন প্রবাসী বাংলাদেশি সবুজ মিয়া

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
৬০ কোটির লটারি জিতলেন প্রবাসী বাংলাদেশি সবুজ মিয়া
বাংলাপ্রেস ডেস্ক: ভাগ্যিস সেদিন মন সায় দিয়েছিল! ১৮ বছর ধরে দুবাইয়ে থাকা বাংলাদেশি দর্জি সবুজ মিয়া আমির হোসেন দেওয়ান প্রথমবার লটারির টিকিট কিনেছিলেন, আর প্রথমবারেই জিতে নিলেন ২০ মিলিয়ন দিরহাম (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০ কোটি টাকা)। লটারির ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল হলেও সবুজের কাছে এটি ভাগ্যের চেয়ে বেশি কিছু—এটি যেন মনের অদম্য বিশ্বাসের জয়। দুবাইয়ে দর্জির কাজ করেন সবুজ। প্রায় দুই দশক ধরে প্রবাসজীবন কাটাচ্ছেন তিনি। তার অনেক পরিচিতজনই নিয়মিত ‘বিগ টিকিট’ লটারি কেনেন। সবুজকে অনেকবার অনুরোধ করেছেন টিকিট কেনার জন্য কিন্তু তিনি কখনো আগ্রহ দেখাননি। কিন্তু ২৯শে জুলাই ছিল এক ব্যতিক্রমী দিন। এক গ্রাহকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আবু ধাবিতে যান সবুজ। তখনই তার মাথায় লটারি কেনার ভাবনা আসে। সবুজ বলেন, অনেকেই আমাকে বলতেন কিন্তু আমি কখনো কিনিনি। সেদিন কেন জানি মন বলল, এবার একটা টিকিট কিনেই দেখি,” সবুজ বলেন ‘খালিজ টাইমস’কে। আবু ধাবিতে কাজ শেষ করে সবুজ এক ট্যাক্সি ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করেন, কীভাবে বিগ টিকিট কেনা যায়। ড্রাইভার তাকে স্টোরের ঠিকানা দেখিয়ে দেন। সবুজ যখন স্টোরে পৌঁছান, তখন জানতে পারেন টিকিটের দাম ৫০০ দিরহাম। এত টাকা দিয়ে লটারির টিকিট কিনবেন কিনা তা নিয়ে তার মনে কিছুটা সংশয় জাগে। “অনেক কিছু করা যেত এই টাকা দিয়ে। কিন্তু মনটা জেদ ধরল, যেন কিনতেই হবে,” তিনি জানান। মনের কথা শুনেই টিকিটটি কিনে ফেলেন সবুজ। এরপর থেকেই তার মন এক অদ্ভুত আত্মবিশ্বাসে ভরে ওঠে। তিনি বলেন, “আমি সারাদিন কাজ করতাম, আর হঠাৎ করেই টিকিটের কথা মনে পড়ত। মন বলত, আমি জিতব। নিজেকে বলতাম, প্রথমবার কিনেই জেতা সম্ভব নয়। কিন্তু মনটা ছিল খুব আত্মবিশ্বাসী।” পাঁচ দিন পর, সেই আত্মবিশ্বাসই সত্যি হলো। মাসিক লটারির ড্র-তে তার নাম ঘোষণা করা হয়। জুলাই মাসেও আরেকজন বাংলাদেশি, মোহাম্মদ নাসের বেলাল, ২৫ মিলিয়ন দিরহামের গ্র্যান্ড প্রাইজ জিতেছিলেন। এবারের বিজয়ী সবুজের টিকিটটিও বেছে নিয়েছিলেন তিনিই। জয়ের খবর জানার পর থেকেই সবুজকে ফোন করা শুরু করে বাংলাদেশি গণমাধ্যমগুলো। তবে তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে এত বড় অঙ্কের টাকা তিনি জিতেছেন। সবুজ বলেন, “যতক্ষণ না টাকাটা হাতে পাচ্ছি, ততক্ষণ বিশ্বাস হবে না। বাংলাদেশি মিডিয়া থেকে অনেক ফোন আসছে, কিন্তু আমি কথা বলিনি। কোথাও যেন ভয় পাচ্ছি, যদি এটি মিথ্যা হয়।” সবুজ জানান, এই টাকা হাতে পেলে তার প্রথম কাজটি হবে পবিত্র ওমরাহ পালন করতে মক্কায় যাওয়া। “আমি জানুয়ারিতেই ওমরাহ করার কথা ভেবেছিলাম। টিকিট কেনার সময়ও ভেবেছিলাম, যদি জিতিও সবার আগে ওমরাহ করব। এরপর বাকি টাকা নিয়ে কী করব, তা নিয়ে ভাবব।” সবুজ আরও বলেন, তার পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী, ১০ বছর ও ৩ বছর বয়সী দুই ছেলে, মা এবং বোন। তারা সবাই বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম থেকে তার জয়ের খবর জানতে পারেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করেন। সবুজ বলেন, “আমি তাদের বলেছি, আমি টিকিট কিনেছিলাম, কিন্তু এখনও নিশ্চিত নই। আমি নিশ্চিত যে আল্লাহ আমাকে এই টাকা ঠিকভাবে খরচ করার পথ দেখাবেন। আমি সবকিছু আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি।” সূত্র: খালিজ টাইমস [বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।] বিপি/টিআই
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন