১৩ অক্টোবর ২০২৫

বহিস্কার হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক বাংলাদেশি মনির

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
বহিস্কার হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক বাংলাদেশি মনির
  আবু সাবেত: যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানকারী এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। নাবালিকাদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগে প্রয়োগ এবং অপসারণ অপারেশন (ইআরও)-এ সম্প্রতি কানেকটিকাট পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেন। বোস্টনের আওতাধীন কানেকটিকাটের হার্টফোর্ড অফিসের নির্বাসন কর্মকর্তারা উক্ত অপারেশনে সহযোগিতা করেন। মনির উদ্দিন (৪৭) নামের এ বাংলাদেশিকে গত বছর ২২ এপ্রিল কানেকটিকাটের লিচফিল্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়। ট্রাম্পের বর্তমান অভিবাসন দমন অভিযানের আওতায় তিনি বহিস্কারের মুখোমুখি হতে পারেন বলে ধারণা করেছেন স্থানীয় প্রবাসীরা। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা (সিবিপি) কর্মকর্তারা ২০১৭ সালের ১২ অক্টোবর মনির উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ী ট্রানজিট ভিসায় পরিবহন কাজের উদ্দেশ্যে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল। তবে তিনি ৯ নভেম্বর ২০১৭ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রে থেকে ওই ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেন। কানেকটিকাটের প্রবাসী বাংলাদেশি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খুব স্বল্প সময়ে তিনি মারাত্মক অপরাধ করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতে তার মুক্ত হবার কোন সুযোগ নেই। ট্রাম্পের বর্তমান অভিবাসন দমন অভিযানের অবৈধ অভিবাসীদের চেয়ে অপরাধীদেরকেই বেশি গ্রেপ্তার করছেন। এ অবস্থায় তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কার করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। কানেকটিকাট স্টেট পুলিশ ২ এপ্রিল তাকে গ্রেফতার করে্ন নাবালিকাদের সাথে যৌন নির্যাতন, অবৈধ যৌন যোগাযোগ, চতুর্থ ডিগ্রির যৌন নির্যাতন, শিশুর প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এবং ২১ বছরের কম বয়সীদের কাছে অবৈধভাবে তামাকজাত পণ্য বিক্রির একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। তিনি কানেকটিকাটের লিচফিল্ড সিটগো গ্যাস স্টেশন/কনভিনিয়েন্স স্টোরের দোকান কর্মী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাকে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি একজন বাংলাদেশি নাগরিক বলে উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রিয় ইভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ দপ্তরের মুখপাত্র জন মোহন। মনির লিচফিল্ড সিটগো গ্যাস স্টেশন/কনভিনিয়েন্স স্টোরে কাজ করাকালীন সময় গত জানুয়ারি মাসে তিনজন ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে ভিন্ন ভিন্ন সময় চুমু দিয়েছেন, আলিঙ্গন করেছেন এবং তাদেরকে দোকানে আটকে রেখেছেন। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, নিউ ইয়র্ক সিটির বাসিন্দা উদ্দিনের বিরুদ্ধে শিশুর যৌন নির্যাতন, অবৈধ যৌন সম্পর্ক, শিশুকে আহত করার ঝুঁকি, দ্বিতীয় ডিগ্রি অবৈধ শ্বাসরোধ এবং চতুর্থ ডিগ্রি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রয়োগ এবং অপসারণ অপারেশন (ইআরও)-এর পরিচালক টড এম. লায়নস বলেন, অবৈধভাবে বসবাসকারী এই ব্যক্তি আমাদের কানেকটিকাট সম্প্রদায়কে শিশুদের যৌন নির্যাতন করে ক্ষতি করেছে। ইআরও বোস্টন শাখা আমাদের স্থানীয় সঙ্গীদের সঙ্গে কাজ করতে থাকবে। যাতে আমাদের নিউ ইংল্যান্ড সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। গত বছর ২০ এপ্রিল ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কানেকটিকাট ডিপার্টমেন্ট অফ করেকশনসের নিউ হেভেন করেকশনাল সেন্টারে তার হেফাজতে থাকার জন্য একটি ইমিগ্রেশন ডিটেইনার জারি করে। এরপর ২২ এপ্রিল তাকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয় এবং বিচার বিভাগ (ডিওজে)-এর ইমিগ্রেশন বিচারকের সামনে পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তিনি আইসিই হেফাজতেই থাকবেন। ইআরও-এর দায়িত্বের অংশ হিসেবে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত বা রাজ্য ও স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে থাকা প্রত্যাবাসনযোগ্য অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন ডিটেইনার জারি করা হয়। এটি একটি অনুরোধ যেখানে আইসিই সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অভিবাসীকে মুক্তি দেওয়ার আগে যথাশীঘ্রই আইসিই-কে অবহিত করার আহ্বান জানায়। এই ডিটেইনারের মাধ্যমে রাজ্য বা স্থানীয় সংস্থা ব্যক্তিকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অতিরিক্ত সময় হেফাজতে রাখার অনুমতি দেয়। যাতে ইআরও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিবাসন হেফাজতে নিতে পারে। ইআরও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানকারী ব্যক্তিদের সনাক্তকরণ গ্রেফতার এবং প্রত্যাবাসনের দায়িত্ব পালন করেন। এই প্রক্রিয়াটি বিচার বিভাগের নির্বাহী অফিস ফর ইমিগ্রেশন রিভিউ (ইওআইআর)-এর অধীনে ইমিগ্রেশন বিচারকদের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। ইওআইআর হলো হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট (ডিএইচএস) এবং আইসিই থেকে স্বতন্ত্র একটি সংস্থা। ইমিগ্রেশন আদালতের বিচারকরা প্রতিটি কেসের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেন যে কোনো অভিবাসীকে চূড়ান্ত ডিপোর্টেশন আদেশের আওতায় আনা হবে কি না বা তিনি কোনো ধরনের আইনি সুরক্ষা পাওয়ার যোগ্য কি না। ইআরও হলো আইসিই-এর তিনটি প্রধান পরিচালন সংস্থার একটি। যা অভ্যন্তরীণ অভিবাসন আইন প্রয়োগের জন্য দায়ী। এর মিশন হলো যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা নিশ্চিত করা।যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনের শৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং দেশের নিরাপত্তা ও সমাজের স্থিতিশীলতাকে দুর্বল করে এমন ব্যক্তিদের সনাক্ত ও প্রত্যাবাসন করা। ইআরও-এর কর্মীসংখ্যা ৭,৭০০-এরও বেশি। যাদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা এবং প্রশাসনিক সহায়ক কর্মী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তারা ২৫টি অভ্যন্তরীণ ফিল্ড অফিস,২০৮টি অফিস এবং ৩০টি বিদেশি পোস্টে দায়িত্ব পালন করেন। যা অভিবাসন প্রয়োগ এবং সীমান্তবর্তী অস্থায়ী দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করে।  
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন