১৪ অক্টোবর ২০২৫

ইউরোপে তাপপ্রবাহে ১০ দিনের ২৩০০ মৃত্যু

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
ইউরোপে তাপপ্রবাহে ১০ দিনের ২৩০০ মৃত্যু
  বাংলা প্রেস ডেস্ক: ইউরোপে ১০ দিনের ভয়াবহ তাপপ্রবাহে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মানুষ মারা গেছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনের মৃত্যুর জন্য জলবায়ু পরিবর্তন–সংশ্লিষ্ট বিষয় জড়িত। বুধবার প্রকাশিত বিজ্ঞানীদের এক প্রাথমিক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য ওঠে এসেছে। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন এবং লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। গবেষণার অংশ হিসেবে গত ২৩ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ইউরোপের ১২টি শহরের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। এই সময়ে পশ্চিম ইউরোপের কোনো কোনো অংশে তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল। স্পেনে তাপমাত্রা ছাড়িয়েছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দাবানল শুরু হয়েছিল ফ্রান্সে। এত অল্প সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মানুষের মৃত্যুর বিষয়কে উদ্বেগজনক বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের গবেষক ড. বেন ক্লার্ক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বেড়েছে। আর সেটাই পরিস্থিতিকে অনেক বেশি বিপজ্জনক করে তুলেছে।’ গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত শহরগুলো হলো স্পেনের বার্সেলোনা ও মাদ্রিদ, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, ইতালির মিলান, রোম ও সাসারি, ফ্রান্সের প্যারিস, জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট, হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট, ক্রোয়েশিয়ার জাগরেব, গ্রিসের অ্যাথেন্স এবং পর্তুগালের লিসবন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব শহরের তাপমাত্রা প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছিল। গবেষকেরা প্রতিষ্ঠিত মহামারিসংক্রান্ত মডেল ও অতীতের মৃত্যুর তথ্য ব্যবহার করে মৃতের সংখ্যা অনুমান করেছেন। এই দুই হিসেবে মূলত গরমের কারণে মৃত ব্যক্তিদের ধরা হয়েছে। তবে সেসব ব্যক্তিকেও হিসেবে ধরা হয়েছে, যাঁরা আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু গরমের কারণে তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। গবেষকেরা বলেছেন, তাঁরা পিয়ার-রিভিউড (অন্য বিশেষজ্ঞের অনুমোদিত) পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর আনুমানিক সংখ্যা হিসাব করেছেন। কারণ, গরমজনিত অধিকাংশ মৃত্যুর তথ্য সরকারিভাবে রেকর্ড করা হয় না এবং কিছু দেশ এই তথ্য প্রকাশই করে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস গতকাল মাসিক বুলেটিনে জানিয়েছে, গত জুন ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে তৃতীয় সবচেয়ে গরম মাস। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে গরম অন্য দুটি মাস ছিল যথাক্রমে ২০২৩ ও ২০২৪ সালের জুন মাস। কপার্নিকাসের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম ইউরোপে গত জুনে এযাবৎকালে সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছে। ফলে অঞ্চলটি ‘খুব শক্তিশালী তাপপ্রবাহের’ মধ্য দিয়ে গেছে। এই সময়ে ওই অঞ্চলের অনেক জায়গায় এমন তাপমাত্রা অনুভূত হয়েছে, যা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি বলে অনুভূত হয়েছে। কপার্নিকাসের জলবায়ুবিষয়ক কৌশল তৈরির প্রধান সামান্থা বার্গেস বলেন, ‘ক্রমশ উষ্ণ হতে থাকা পৃথিবীতে আরও ঘন ঘন তাপপ্রবাহ হতে পারে এবং তা আরও শক্তিশালী হতে পারে। এতে ইউরোপজুড়ে আরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ ২০২৩ সালে ইউরোপীয় স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর গবেষকেরা দাবি করেন, ২০২২ সালের তীব্র তাপপ্রবাহে ইউরোপজুড়ে প্রায় ৬১ হাজার মানুষ মারা গেছেন। এর অর্থ হলো দেশগুলোর অতিরিক্ত তাপপ্রবাহ মোকাবিলার প্রস্তুতি ছিল খুবই অপর্যাপ্ত। বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বাড়ছে, যা প্রধানত তেল, কয়লা ও অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বেসলাইন (ভিত্তিমূল) তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। এই বেসলাইন তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে তাপপ্রবাহের সময় তাপমাত্রা আগের চেয়ে অনেক বেশি বাড়তে পারে। [বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।] বিপি > এস পি
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন