১৪ অক্টোবর ২০২৫

নাগেশ্বরীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ত্রাণের জন্য হাহাকার

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
নাগেশ্বরীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ত্রাণের জন্য হাহাকার

এজি লাভলু, কুড়িগ্রাম থেকে : কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, চরাঞ্চলের শতাধিক নিন্ম অঞ্চল প্লাবিত। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে এসব এলাকায়। সরকার ত্রাণ তৎপরতা শুরু করলেও তা অপ্রতুল বলে অভিযোগ বানভাসিদের।

নাগেশ্বরীতে টানা বৃষ্টি, উজান ও পাহাড়ি ঢলে গঙ্গাধর,দুধকুমর, ফুলকুমর, সংকোশ ১৪ নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে এবং নুনখাওয়া নদের পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। গতকাল দুপুরে নুনখাওয়া পয়েন্টে ২৬ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। প্লাবিত হয়েছে নাগেশ্বরীর চরাঞ্চলের শতাধিক নিন্ম অঞ্চল। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।

নাগেশ্বরী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতার অফিস সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকা ও ৫ মেট্রিক টন চাল এবং ২ শত প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় টানা বৃষ্টি, উজান ও পাহাড়ি ঢলে গঙ্গাধর, দুধকুমর, ফুলকুমর, সংকোশ ১৪ নদ-নদীর পানি বাড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, চরাঞ্চলের শতাধিক নিন্ম অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি উঠেছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন জাতের ফসল ও বীজ তলা। পানি বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। টানা বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে উপজেলার এসব নদীগুলোতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়ে দুকূল ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে প্রতিদিন নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।

নাগেশ্বরী পৌরসভাসহ ১৪ ইউনিয়নে গতকাল পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে প্রায় সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে- দুধকুমর, ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গাধর ও শংকোস বিধৌত নারায়নপুর ইউনিয়নের বালারহাট, ঝাউকুটি, কন্যামতি, আদর্শগ্রাম, মাঝিয়ালী, বংশিরচর, কচাকাটা ইউনিয়নের ধনিরামপুর, মধ্যে ধনিরামপুর, শৈলমারী, জালিরচর, কাইয়ের চর, টঙ্কারচর, সাতানা, বড় ছড়ারপার, চড়াই গ্রাম, নওদাপাড়া, ভোডেরহাইল্যা, ইন্দ্রগড়, কাটাজেলাস, কেদার ইউনিয়নের চর বিষ্ণুপুর, টাপুর চর, পুটিমারী, নুনখাওয়া ইউনিয়নের সারিসুরি, কাপনা, বোয়ালমারী, চরপাটতলা, চরকাপনা, মাঝেরচর, কাটগিরী, ফকিরগঞ্জ, কারিকাপুর, পাটতলা গুচ্ছগ্রাম, কালীগঞ্জ ইউনিয়নের ফান্দিরভিটা, সাহেবগঞ্জ, ধনীরপাড়, পুর্ব কুমড়িয়ারপাড়, নামারচর, বেরুবাড়ী ইউনিয়নের নয়ারচর, চরবেরুবাড়ী, বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের চরলুছনি ও রায়গঞ্জ ইউনিয়নের দামালগ্রাম, পাঁচমাতা, বল্লভেরখাস ইউনিয়নের টাপুরচর, ফান্দিরচর, নামারচরসহ শতাধিক নিন্ম অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে প্লাবিত এ গ্রামের পানিবন্দী মানুষগুলো। ভেসে গেছে এসব এলাকার পুকুরের মাছ। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন তারা।

টানা বৃষ্টি, উজান ও পাহাড়ি ঢলে প্রবল বেগে ঢুকছে বন্যার পানি। ফলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। পানি উঠেছে অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুলের চারদিক প্লাবিত হয়ে রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যালয়ে আসতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুজ্জামান জানান, পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে। এছাড়াও বন্যার্ত এলাকাগুলোতে দ্রুত পাট কেটে নেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। নাগেশ্বরী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা সিরাজুদ্দৌলা জানান, এখন পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকা ও ৫ মেট্রিক টন চাল এবং ২ শত প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুজ্জামান জানান, পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে। এছাড়াও বন্যার্ত এলাকাগুলোতে দ্রুত পাট কেটে নেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত মো.আল ইমরান বলেন, এরই মধ্যে বন্যার্তদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা সতর্ক রয়েছি।

বিপি/আর এল

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন