১৪ অক্টোবর ২০২৫

নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি যুবককে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করেছে পুলিশ

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি যুবককে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করেছে পুলিশ
নোমান সাবিত: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। পুলিশের দাবি, উইন রোজারিও নামে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তাদের ওপর কাঁচি নিয়ে হামলার চেষ্টা করলে তারা গুলি চালাতে বাধ্য হয়। তবে পরিবার বলছে, উইনকে তাঁর মা জড়িয়ে ধরে পুলিশের প্রতি গুলি না চালানোর অনুরোধ করেন। পুলিশ তা আমলে না নিয়ে গুলি করেছে। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে কুইন্সের ওজোন পার্ক এলাকার ১০৩ স্ট্রিটের ১০১ অ্যাভিনিউর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা ঘটনার তদন্ত দাবি করছে। নিহত ১৯ বছরের উইনের বাড়ি বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার পুবাইলের হারবাইড গ্রামে। বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও ও মা ইভা কস্তা। মা-বাবা, এক ভাইসহ তারা দীর্ঘদিন ধরে ওজোন পার্ক এলাকায় থাকেন। ফ্রান্সিস রোজারিও ২০১৪ সালে পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। উইন নিউইয়র্কের জন অ্যাডামস হাই স্কুল থেকে স্নাতক পাস করে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের পরীক্ষায়ও পাস করেন। তিনি সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। এ অবস্থায় মানসিক ভারসাম্য হারান তিনি। স্থানীয় ব্যবসায়ী সুখেন গমেজ বলেন, মাত্র ১৯ বছরের একটি ছেলে, যার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ নেই তাকে পুলিশ কীভাবে গুলি করে মারতে পারে। আমারা বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে এ হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত ও বিচার চাই। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে প্রবাসীরা বৃহৎ আন্দোলনে যাবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ সোসাইটি প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছে তবে এখন তারিখ নির্ধারন করেননি। পুলিশের দাবি, মানসিক ভারসাম্যহীন উইনের বাড়ি থেকে তাঁর মায়ের ফোন পেয়ে তারা সেখানে গিয়েছিলেন। সাহায্যের চেষ্টা করলে উইন পুলিশের ওপর কাঁচি দিয়ে হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় আত্মরক্ষায় তারা গুলি করেছেন। তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেখানে বলা হয়, পুলিশকে ফোন দিয়েছেন খোদ উইন। তাঁকে হত্যা করা হয় মায়ের সামনে, যিনি তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন। ঘটনাস্থলে ছিলেন উইনের ছোট ভাই ১৭ বছরের উস্তো রোজারিও। তার দাবি, যখন পুলিশ গুলি করেছে, তখন মা তাঁর ভাইকে বুকে আগলে রেখেছিলেন এবং গুলি চালানোর প্রয়োজন নেই বলে জানাচ্ছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তা জন চেল বলেন, দুই পুলিশ কর্মকর্তা উইনকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তারা তাঁকে সংজ্ঞাহীন করার টেজার ছোড়েন। এ সময় উইনের মা এগিয়ে এসে তাঁর শরীর থেকে টেজার বের করেন। তখন উইন কাঁচি হাতে নিয়ে মারমুখী হলে পুলিশ গুলি চালায়। উইনের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিওর দাবি ছেলের মানসিক সমস্যা আছে বলার পরও পুলিশ কথা শোনেনি। পুলিশ ঠান্ডা মাথায় তাঁর ছেলেকে খুন করেছে। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করেন তিনি। পুলিশ কর্মকর্তা জন চেল জানাননি উইনকে কয়টি গুলি করা হয়েছে। তবে তাঁর পরিবারের দাবি, ছয়বার গুলি করা হয়েছিল। পুলিশ কর্মকর্তার শরীরে লাগানো ক্যামেরায় পুরো ঘটনা ধরা পড়ে। ফুটেজ প্রকাশ করা হয়নি। বিপি।এসএম
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন