১৪ অক্টোবর ২০২৫

পিলখানায় সেনা হত্যার বিচারের নামে চলছে প্রহসন: যুক্তরাষ্ট্র জাগপা

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
পিলখানায় সেনা হত্যার বিচারের নামে চলছে প্রহসন: যুক্তরাষ্ট্র জাগপা
নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি: পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দিন ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষনা করার দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)। দেশের সামরিক বাহিনীর মনোবল ভেঙে দিতে এবং মেধাশূণ্য করার লক্ষ্যেই আওয়ামীলীগ সরকারের সাথে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোপন চক্রান্তে পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। সেনা কর্মকর্তাদের হত্যায় এখন বিচারের নামে প্রহসন চলছে। প্রকৃত কুশীলবদের মুখোশ একদিন উন্মোচিত হবে। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই। গত রবিবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে নোয়াখালী সোসাইটি ভবনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় জাগপার নেতারা এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)’র সভাপতি এএসএম রহমত উল্যাহ ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক নোমান সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় শহীদ সামরিক কর্মকর্তাদের স্মরণে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রগ্রেসিভ ফোরামের সভাপতি ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক নুর ইসলাম, বিএনপি নেতা আবুল বাশার, জাহাঙ্গীর শহীদ সরওয়ার্দি, সালেহ আহমেদ মানিক আহসান উল্লাহ বাচ্ছু, নুর আলম, সাইফুল ইসলাম ও আশরাফুল হাসান প্রমুখ। প্রধান অতিথি অধ্যাপক নুর ইসলাম বলেন, দেশী-বিদেশী চক্রান্তে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। সহজেই বোঝা যাচ্ছে, সামরিক বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্যই ওই হত্যকাণ্ড। এটি দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র। এ ঘটনায় এখন বিচারের নামে প্রহসন হচ্ছে। যেজন্য প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তারা জানে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের ফলে সেনাবাহিনী থেকে অনেক দুর্বল চিত্তের মানুষ বের হয়ে যাবে। সব সময় তারা আতংকে থাকবে এবং দেশের প্রতি তাদের যে কর্তব্য সেটা পালনে সক্ষম হবে না। তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না দাবি করে তিনি আরো বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তা আজও প্রকাশ করা যায়নি। সেই তদন্ত রিপোর্টটি প্রকাশের দাবি জানান তিনি। অধ্যাপক নুর ইসলাম বলেন, আমি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। দেশে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবেই পরিচিত ছিলাম।পরে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিলাম। এখন জামায়াতে ইসলামী করছি। এ ব্যাপারে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন কেন তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং আওয়ামীলীগার হয়ে জাময়াতের রাজনীতি করছেন? জবাবে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে জড়িতরা কীভাবে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করছে আগে এই প্রশ্নের উত্তর দেন। তাহলেই বুঝবেন কেন আমি জামাতের রাজনীতি করছি। তিনি বলেন, শেখ মুজিবের চৌদ্দগোষ্ঠির কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেননি। আর বর্তমানে কোন ভদ্রলোক আওয়ামীলীগ করেন না। যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)’র সভাপতি এএসএম রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া বলেন, ওই দিন বেছে বেছে সেনাবাহিনীর সবচেয়ে ভালো ভালো অফিসারদের সরকারের চরেরা হত্যা করেছে। সেনাবাহিনীকে মেধাশূন্য করতেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, প্রভুদের নির্দেশে ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অস্বীকার করতে পারেন না। তিনি বলেন, আগামীতে যদি বিএনপি কিংবা ২০ দলীয় জোটের ক্ষমতার সুযোগ আসে, তাহলে ২১ ফেব্রুয়ারি যেভাবে পালন করা হয় ২৫ ফেব্রুয়ারিও সেভাবে পালন করার ব্যবস্থা করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র জাগপা’র সভাপতি আরো বলেন, এই ধরনের ঘটনা আরও ঘটবে যদি দেশে নির্বাচিত এবং জনগণের সমর্থনপুষ্ট সরকার না থাকে। যে নেতার জনসমর্থন আছে, যে নেতার কথায় লক্ষ কোটি জনগণ রাস্তায় নেমে আসে, সেই ধরনের নেতা যদি দেশে না থাকে তাহলে সামরিক বাহিনীও দায়িত্ব পালন করতে পারে না। তিনি বলেন, আজ মানুষও গণতন্ত্র বঞ্চিত। বাংলাদেশের মানুষও একটি বৃহৎ কারাগারে বাস করছে। দেশে আইনের শাসন, গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার নেই। কোনো হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় না। এএসএম রহমত উল্যাহ ভূঁইয়া বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য ৭ জন শহীদ হল। সেই থেকে অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিবসটি পালন করা হয়। অথচ দেশের জন্য ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা একসঙ্গে মারা গেল কিন্তু দিবসটি সেভাবে শোক পালন করা হল না। তিনি পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দিন ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষনা করার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার অবিলম্বে মুক্তিরও দাবি জানান তিনি। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সমকালীন ও লোকগানের শিল্পী কৌশলী ইমা পিলখানার বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে হৃদয় বিদারক বেশ কিছু মৌলিক গান গেয়ে উপস্থিত দর্শকশ্রোতাদের মন জয় করেন।
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন