১৪ অক্টোবর ২০২৫

সরকার সংবিধানের কথা বললে আমার হাসি পায় : ড. কামাল

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
সরকার সংবিধানের কথা বললে আমার হাসি পায় : ড. কামাল

বাংলাপ্রেস অনলাইন: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘সরকার সংবিধানের কথা বললে আমার হাসি পায়। এই সরকারের ক্ষমতায় থাকাই অসাংবিধানিক। দিনে-রাতে নিজেরা সংবিধান লঙ্ঘন করছে। আর আমাদের সংবিধান দেখাচ্ছে।’ আজ শনিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত আইনজীবীদের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, কাকে তোমরা সংবিধান দেখাচ্ছো? সংবিধানের প্রথম লাইনে সংবিধান লেখা আছে। এরপরে আর কোনো লাইন তারা যে পড়ে আমার তা মনে হয় না। পড়লে এভাবে সংবিধান করতো না। পড়লে দেখবে যে, তোমরা একেকটা বিধান লঙ্ঘন করছো। মন্ত্রী যে বলা হচ্ছে, এরা কারা? উপদেষ্টা, এরা কারা? তারপর যাদেরকে মেম্বার বলা হচ্ছে, তারা কারা এমন প্রশ্ন তোলেন সংবিধান প্রণেতা।

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার প্রসঙ্গ টেনে কামাল হোসেন বলেন, ষোড়শ সংশোধনীতে সাতজন বিচারপতি মিলে একটা রায় দিলেন কিন্তু কথা শুনতে হলো সিনহা সাহেবকে। এত লজ্জা আমি জীবনে পাইনি, যে দিন দেখেছি কোনো এক মন্ত্রী যিনি প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে বলেছিলেন ‘তোকে কে নিয়োগ দিয়েছিল?’

‘তোকে কে নিয়োগ দিয়েছে?’ একজন প্রধান বিচারপতিকে কেউ এভাবে বলতে পারে না। সে যেই হোক। যে এসব কথা বলেছে তার আদালত অবমাননা এখনও হতে পারে বলেও তিনি জানান। কামাল বলেন, যে ব্যক্তি এসব কথা বলেছে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করতে পরামর্শ দেন তিনি। এসব বিষয়ে হালকাভাবে নেয়া উচিত না। আজ হোক, কাল পরশু যে দিনই হোক এসব বলে কেউ পার পাবে না। তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি, গত পাঁচ বছর দেশ যেভাবে শাসিত হয়েছে এটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে, আমি জানি না।

সংবিধানের মৌলিক কথা হচ্ছে, জনগণ ক্ষমতার মালিক। কিন্তু জনগণ যদি তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দিয়ে তাদের ক্ষমতা না প্রয়োগ করাতে পারে তাহলে স্বাধীনতার ওপরে আঘাত দেয়া হয়। দেশ স্বাধীন থাকে না। এই দেশটাকে পরাধীন দেশ বানাতে দিতে পারি না। লাখ লাখ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতার অর্থ হলো জনগণ এই ক্ষমতার মালিক।

বিশিষ্ট এই আইনজীবী আরও বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করলাম। এটা খেলার কথা না। আমরা তাদের উত্তরসূরি হিসেবে এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না, শহীদের রক্তের সঙ্গে আমরা বেঈমানি করতে পারি না। যারা আমাদের দেশের মালিক করে গেল, মালিক হিসেবে নিঃস্ব হয়ে, কেউ ক্ষমতা আত্মসাৎ করে যেনতেনভাবে আমাদের জনগণকে ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করছে, আমাদের সুশাসন থেকে বঞ্চিত করছে, সাংবিধানিক শাসন থেকে বঞ্চিত করে যেনতেনভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করছে। এটা কী আমরা মেনে নিতে পারি?

নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে ড. কামাল বলেন, সবার মতামত উপেক্ষা করে কোটি কোটি টাকা ব্যবহার করে কেন ইভিএম ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। এই সরকারের বড় ঘাটতি হলো দেশ ১৬ কোটি মানুষের কিন্তু এরা পাচঁজন মিলে যা মনে করেন তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। জাতীয় নীতির তোয়াক্কা না করে তারা এসব করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘একবার নির্বাচন বয়কট করে ভুগতে হয়েছে। ওরা যত ১০ নম্বরিই করুক, হাজারে হাজারে মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে। প্রতি ঘরে ঘরে গিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে।’

বাংলাপ্রেস/এফএস

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন