১৩ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে দেশে গেলেন বাংলাদেশি আলম

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে দেশে গেলেন বাংলাদেশি আলম
  নোমান সাবিত: যুক্তরাষ্ট্রে থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে দেশে গেলেন প্রবাসী বাংলাদেশি ও নিউ ইয়র্কের জনপ্রিয় নিউ ইয়র্কের শো টাইম মিউজিকের স্বত্বাধিকারী আলমগীর খান আলম। তিনি দীর্ঘ ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করলেও ছিল না কোন বৈধ কাগজপত্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসী দমনের অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়াতে ঝটিকা অভিযান শুরু করেছে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই) যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী। আইসিই'র হাতে গ্রেপ্তার এবং বাধ্যতামূলক বহিষ্কার এড়াতে তড়িঘড়ি করে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে দেশে ফেরার এ সিদ্ধান্ত নেন ঢালিউড অ্যাওয়ার্ডেসের কর্ণধার আলম। নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশিদের একাধিক সুত্র জানিয়েছে, গত শুক্রবার ( ৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিনি নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দর থেকে একটি বিমানে করে দেশে ফেরেন। দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি কাউকে কোন আগাম ইঙ্গিত দেননি। পরদিন শনিবার তার দেশে ফিরে যাবার খবরটি প্রকাশ পায়। তবে অপর একটি সুত্র জানিয়েছে দেশে তার মা গুরুতর অসুস্থ তাই তিনি দেশে গেছেন। এ বিষয়টিও তিনি কাউকে জানাননি। আলমগীর খান আলম গত ১৮ জানুয়ারি নিউ ইয়র্কে এবারে ঢালিউড ফিল্ম অ্যান্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসের ২৪তম আসরের আয়োজন করেন ফ্লাশিং মিডোস করোনা পার্কের কুইন্স থিয়েটারের মিলনায়তনে। দেশ ও প্রবাসের ২৭ জন শিল্পী-কলাকুশলীকে এবারে ঢালিউড ফিল্ম অ্যান্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস প্রদান করেন। প্রায় দুই যুগ ধরে ঢালিউড ফিল্ম অ্যান্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন। এছাড়াও তিনি প্রতিবছর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পিঠামেলার আয়োজন করে থাকে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রবাসীদের মনে আনন্দ দিলেও তার নিজের মনে ছিল না কোন আনন্দ। তিনি দীর্ঘ ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে। গত ২৮ জানুয়ারি সকালে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস)'র পরিচালনায় নিউ ইয়র্ক সিটিতে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই) অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেন। এ সময় ডিএইচএস'র সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম উপস্থিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ধরপাকড় শুরু হওয়ায় অন্যান্য বাংলাদেশি অভিবাসীদের মত আলমগীর খান আলমও কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে তাকে মনমরা হয়ে ঘুরতে দেখেছেন অনেকেই। হতাশা আর বিষণ্নতা কাটাতেই তিনি স্বেচ্ছায় নির্বাসনে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন সুত্রটি। কেন স্বেচ্ছায় নির্বাসন নেওয়া হয়? আইনি পরিণতি হালকা হয়- যাদের নির্বাসন দেওয়া হয় তারা সাধারণত ১০ বছর বা আজীবনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ হন। কিন্তু স্বেচ্ছায় নির্বাসনে এই নিষেধাজ্ঞা থাকে না বা কম হয়। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার সুযোগ-স্বেচ্ছায় নির্বাসন নেওয়া অভিবাসীদের ভবিষ্যতে আইনসম্মতভাবে ভিসা বা গ্রিন কার্ডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার সুযোগ থাকে। আদালত ও সরকারকে সহযোগিতা করার সুযোগ-স্বেচ্ছায় নির্বাসন নিয়ে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করলে, পরবর্তী সময়ে ভিসা বা অভিবাসন সংক্রান্ত অন্যান্য সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। জরিমানা বা কারাদণ্ড এড়ানো যায়-অনেকে আদালতের কঠোর সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে স্বেচ্ছায় নির্বাসন নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দেশে ফিরে যেতে চান। কে স্বেচ্ছায় নির্বাসন নিতে পারে? এটি সাধারণত নিম্নলিখিত পরিস্থিতিতে অনুমোদিত হয়-ইমিগ্রেশন কোর্টে বিচারাধীন অভিবাসীরা, যারা আদালতের রায়ের আগেই নিজ দেশে ফিরে যেতে চায়। অবৈধ অভিবাসীরা যাদের বিরুদ্ধে অভিবাসন নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে কিন্তু এখনো চূড়ান্ত বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়নি। গ্রেফতার হওয়া অভিবাসীরা যদি তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজ দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেন এবং যোগ্যতা পূরণ করেন। স্বেচ্ছায় নির্বাসনের শর্তসমূহ: অভিবাসীকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৬০-১২০ দিনের মধ্যে) যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে হবে। নিজ খরচে ভ্রমণের ব্যবস্থা করতে হবে। ভবিষ্যতে আইন লঙ্ঘন না করার নিশ্চয়তা দিতে হবে। স্বেচ্ছায় নির্বাসন জোরপূর্বক বহিষ্কারের চেয়ে কম ক্ষতিকর বিকল্প। এটি অভিবাসীদের ভবিষ্যতে বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার সুযোগ দেয় এবং আইনি প্রক্রিয়ার জটিলতা এড়াতে সাহায্য করে। তবে কারো অভিবাসন পরিস্থিতি জটিল হলে অভিজ্ঞ অভিবাসন আইনজীবীর পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে নিউ ইয়র্কের শো টাইম মিউজিকের স্বত্বাধিকারী আলমগীর খান আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ সম্ভব হয়নি। বিপি।এসএম
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন