বাংলাপ্রেস ডেস্ক: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন-নির্বাচন খেলা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার রাজধানীতে শ্রমিক সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চে দাঁড়িয়ে এ কথা বলেন তিনি।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি,আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, শ্রমজীবী মানুষের ওপর নির্যাতন,বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদ, সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে এই শ্রমিক সামবেশ করা হয়। জাতীয়বাদী শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী, শোভাযাত্রা মগবাজার থেকে আবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। ১৪ সালে (২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি) আমরা ভোট দিতে পারিনি। ১৮ সালে (২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর) আমরা ভোট দিতে পারিনি। সামনে আবার নির্বাচন আসছে, সেটা নিয়ে নির্বাচন-নির্বাচন খেলা শুরু করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ অবৈধ সরকার, যারা জোর করে গত ১৪ বছর ধরে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা অত্যন্ত সুচিন্তিতভাবে-সচেতনভাবে সাধারণ মানুষের সমোস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছে। শ্রমিক ভাইয়েরা এখানে সমবেত হয়েছেন। আপনারা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, শ্রমিকদের কাজের কোনো সংস্থান নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পোশাকখাতে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি পান না। যারা কলকারখানায় কাজ করছে, তারা ন্যায্য মজুরি পান না। কৃষকরা তাদের ন্যায্যমূল্য পান না। অথচ, আজকে আওয়ামী লীগ সরকারে যারা আছে, তাদের সঙ্গে যারা আছে- তারা অন্যায় অর্থ উপার্জন করে, লুটপাট করে বিদেশে পাচার করছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা যদি কৃষকের ন্যায্য অধিকার রক্ষা করতে চাই, শ্রমিকদের ন্যায্যমূল্য এবং তাদের সুস্থ জীবন ফিরিয়ে দিতে চাই, তাহলে প্রয়োজন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এ জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। আজকে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।’
নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশের কোনো নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘কোনো নির্বাচন এদেশে হবে না; যদি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে না হয়। এ জন্য এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নতুন নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন করতে হবে। এছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নাই।’
শ্রমিক শোভাযাত্রা উদ্বোধন ঘোষণার আগে শ্রমিকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন মিছিল হবে। এই মিছিল থেকে দাবি তুলবেন, ‘‘দুনিয়ার মজদুর; এক হও। চাল ডাল, তেলের দাম কমাতে হবে, কাজের ব্যবস্থা করতে হবে, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।’’ শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করবেন। মগবাজার পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে আবার ফিরে আসবেন।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সভাপতি সুমন ভূঁইয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, রকিবুল ইসলাম বকুল, ফিরোজ উজ জামান, কামরুজ্জামান রতন, আমিনুল হক, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
বিপি/কেজে