— ছাবেদ সাথী
কী এমন চমক দেখিয়েছেন যে লন্ডনে ২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকার একটি ফ্লাট বিনামূল্যে উপহার পেয়েছেন রেজওয়ানা সিদ্দিক ওরফে টিউলিপ। এ বিষয়টি এখন দেশ ও বিদেশের বাঙালিদের আলোচনা্র খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে লন্ডন ও নিউ ইয়র্কের বাঙালি পাড়া মহ্ললাগুলোতে এখন শুধু টিউলিপের রুপপুর ও লন্ডনের ফ্লাট নিয়েই চলছে গল্প গুজব।
তাঁর পুরো নাম রেজওয়ানা সিদ্দিক। বাবা-মা আদর করেই ফুলের নামে নাম রেখেছেন টিউলিপ। ব্রিটিশ লেবার পার্টির একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি। তিনি যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেড এবং কিলবার্ন আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টিউলিপ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং ব্রিটেনে বর্ণ, সংস্কৃতি, এবং সামাজিক ন্যায়বিচার বিষয়ক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
২০০৪ সালে টিউলিপ লন্ডনে বিনা মূল্যে একটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন। ফ্লাটটি দিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত আ.লীগ সরকারের একজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। তিনি একজন আবাসন ব্যবসায়ী। তার নাম আবদুল মোতালিফ। তিনি কী কারণে কিংবা টিউলিপের কী দেখে ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (বর্তমানে পাউন্ডের বিপরীতে টাকার দর অনুযায়ী যা প্রায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) দামের ওই ফ্লাটটি তাঁকে উপহার দিয়েছেন তা এখনও পরিস্কার নয়। তবে হিসেব কষে দেখলাম ২০০৪ সালে টিউলিপের বয়স ছিল ২১ বছর। একেবারে ভরা যুবতী।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে দেশটির ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী। তবে ওই ফ্ল্যাটের বিনিময়ে কোনো অর্থ পরিশোধ করতে হয়নি তাঁকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ ওই ব্যবসায়ীর।
বিনা মূল্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিপত্রে। ওই নথিপত্রের তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাতে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) হিসেবে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের নাতনি। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।
টিউলিপ ১৯৮২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত রাজনৈতিক পরিবারে জন্মেছেন। তার বাবা অধ্যাপক শফিক সিদ্দিক এবং মা শেখ রেহানা। তিনি ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন ( ইউসিএল) থেকে ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর কিংস কলেজ লন্ডন থেকে রাজনীতি, নীতিমালা এবং সরকারি বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
টিউলিপ প্রথমে লেবার পার্টিতে যোগ দেন এবং ধীরে ধীরে স্থানীয় রাজনীতিতে নিজের অবস্থান গড়ে তোলেন। তিনি ক্যামডেন কাউন্সিলের কাউন্সিলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি হ্যাম্পস্টেড এবং কিলবার্ন আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৭ এবং ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে পুনর্নির্বাচিত হন।
টিউলিপ নারীর অধিকার, শিশুদের কল্যাণ এবং বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি ব্রিটেনে অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৩ সালে ক্রিশ্চিয়ান উইলিয়ামসের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। তিনি তার পারিবারিক ও রাজনৈতিক জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে কাজ করেন এবং নিজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল।
টিউলিপ ব্রিটেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন সফল নেতা হিসেবে বিবেচিত। তার কাজ ও নেতৃত্ব ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের জন্য অনুপ্রেরণা।
টিউলিপ শিশুদের উন্নয়ন ও শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন বিল পাসে ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার বিষয়ক আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
টিউলিপ সিদ্দিকের জীবন ও কর্ম ব্রিটেনের বহুসাংস্কৃতিক সমাজে কীভাবে একক ব্যক্তিত্ব প্রভাব ফেলতে পারে, তার উদাহরণ। তিনি একজন নারীবাদী, মানবাধিকার কর্মী এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি নিবেদিত রাজনীতিবিদ।
যুক্তরাজ্যের ভূমি নিবন্ধনসংক্রান্ত নথিতে বলা হয়েছে, বিনা মূল্যে পাওয়া ওই ফ্ল্যাট লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে অবস্থিত। ২০০৪ সালে ফ্ল্যাটটি তাঁকে দেওয়া হয়। এর আগে ২০০১ সালে সেটি ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (বর্তমানে পাউন্ডের বিপরীতে টাকার দর অনুযায়ী যা প্রায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) দিয়ে কেনা হয়। ফ্ল্যাটটির বর্তমান দাম নথিতে উল্লেখ করা হয়নি। তবে একই ভবনের আরেকটি ফ্ল্যাট গত আগস্টে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে (প্রায় ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা) বিক্রি হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ভোটার নিবন্ধনসংশ্লিষ্ট নথি থেকে জানা গেছে, চলতি শতকের শুরুর দিকে কিংস ক্রসের ওই ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন টিউলিপ সিদ্দিক। এরপর বেশ কয়েক বছর সেখানে তাঁর ভাই-বোনেরা ছিলেন। পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে টিউলিপের দাখিল করা আর্থিক বিবরণীতে দুটি ফ্ল্যাট থেকে ভাড়া পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানাশোনা আছে এমন একজন ব্যক্তি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, আবাসন ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিফের দুর্দিনে তাঁকে আর্থিক সহায়তা করেছিলেন টিউলিপের মা-বাবা। তাই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ নিজের মালিকানায় থাকা ‘একটি সম্পদ’ টিউলিপকে দিয়েছিলেন।
বর্তমানে ৭০ বছর বয়সী আবদুল মোতালিফ দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে বসবাস করেন। ভোটার নিবন্ধনসংশ্লিষ্ট নথি থেকে জানা গেছে, ওই এলাকায় মোতালিফের ঠিকানায় মজিবুল ইসলাম নামের আরেক ব্যক্তি বসবাস করেন। মজিবুলের বাবা ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।
আবদুল মোতালিফ ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর কাছে কিংস ক্রসের ওই ফ্ল্যাট কেনার কথা স্বীকার করেছেন। তবে পরে সেটি নিয়ে কী করেছেন, তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
আর টিউলিপের ওই ফ্ল্যাট পাওয়ার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতার খবর ‘ভুল’ বলে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর কাছে দাবি করেন তাঁর (টিউলিপ) একজন মুখপাত্র।
টিউলিপকে বিনা মূল্যে এই ফ্ল্যাট দেওয়ার খবর এমন সময় সামনে এল, যখন ৯ প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে টিউলিপ, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত মাসে এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
ওই অভিযোগ ওঠার পর বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট বলেছে, টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের আস্থা রয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন। লেবার পার্টির কর্মকর্তারা ওই অভিযোগগুলো ‘মিথ্যা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামের একটি ওয়েবসাইটে গত ১৭ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রিটে বলা হয়, এতে অভিযোগ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকসহ পাঁচ বিবাদীর বিরুদ্ধে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কথিত আত্মসাতের।
এর আগে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক নিজে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দেশটির মন্ত্রিপরিষদ অফিসের কর্মকর্তারা। টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের ‘সিটি’ মন্ত্রী (সিটি মিনিস্টার)। একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণসংক্রান্ত চুক্তির মাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিক ও তাঁর পরিবারের চার সদস্য চার বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন-এমন অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশে অনুসন্ধান চলছে।
সাম্প্রতি এ বিষয় জানাজানি হয় যে অভিযোগের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ অফিসের শুদ্ধতা ও নীতিসংক্রান্ত দল টিউলিপ সিদ্দিককে প্রশ্ন করেছেন। টিউলিপ সিদ্দিককে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন-এ বিষয় প্রকাশ হওয়ার পর তাঁকে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ অফিসের কর্মকর্তারা প্রশ্ন করলেন।
সাম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিক (৪২), তাঁর মা শেখ রেহানা (৬৯) ও খালা শেখ হাসিনার (৭৭) বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি ১৫ বছর প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার পর গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হন। বাংলাদেশের হাইকোর্ট অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ভুয়া কোম্পানি ও মালয়েশিয়ার একাধিক ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে চার বিলিয়ন পাউন্ড যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন বলে অভিযোগের (রিট) ওপর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন। অভিযোগ সামনে আসার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
সম্প্রতি বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট বলেছে, টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের আস্থা রয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।
দ্য টেলিগ্রাফ–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থ আত্মসাতে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেছেন, অভিযোগের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির কর্মকর্তারা এসব অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন। তাঁরা বলেছেন, শেখ হাসিনার বিরোধীরা রাজনৈতিক কারণে এসব অভিযোগ এনেছেন।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম মেইল অন সানডে জানিয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক ও অন্যদের সঙ্গে সম্পর্কিত ‘তথ্যগত প্রমাণ’ (ডকুমেন্টারি এভিডেন্স) সংগ্রহ করছেন পাঁচজন তদন্ত কর্মকর্তা। এ বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ অন্যদের বক্তব্য জানানোর জন্য তদন্তকারীরা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের চিঠি দিতে পারেন। পত্রিকাটি বলেছে, দুদক বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনের মাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিককে চিঠি পাঠাবে।
নাম প্রকাশ না করা কর্মকর্তারা পত্রিকাটিকে বলেছেন, অভিযোগের বিষয়ে ওই সব ব্যক্তির বক্তব্য পেলে তদন্ত কর্মকর্তারা বিষয়টি মূল্যায়ন করবেন যে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তথ্যবিবরণী (এফআইআর) দায়ের করবেন কি না। এফআইআর হলে টিউলিপ সিদ্দিক একজন সম্ভাব্য সন্দেহভাজন আসামি হবেন। আর এতে বাংলাদেশি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা পাবে।
দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্ত অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত শেষ হলে আমরা সবাইকে চিঠি পাঠাব। জবাব দেওয়ার জন্য তাঁকে (টিউলিপ সিদ্দিক) ডাকা হবে।’
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বলেছেন, তাঁরা যে চিঠি পাঠাবেন, তা টিউলিপ সিদ্দিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ‘আত্মপক্ষ’ সমর্থনের সুযোগ দেবে।
মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের যেসব দায়িত্ব রয়েছে, তার মধ্যে আছে যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতে দুর্নীতি-জালিয়াতি বন্ধ করা। তিনি যদি বাংলাদেশের তদন্ত কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না করেন, তাহলে তা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে যুক্তরাজ্য সরকারের দেওয়া সাম্প্রতিক প্রতিশ্রুতিকে ক্ষুণ্ন করবে। কারণ, শেখ হাসিনা সরকারের কর্মকর্তাদের চুরি করা বিপুল অর্থ পুনরুদ্ধারে সহায়তার ব্যাপারে সম্প্রতি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী তদন্তকে ‘সমর্থন’ দিতে গত অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) তদন্তকারীরা বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
ছাবেদ সাথী, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কবি, লেখক ও সাংবাদিক। সম্পাদক-বাংলা প্রেস