245
বাংলাপ্রেস অনলাইন: ২৫ বছর ধরে এক রক্ত ক্ষরণ নিয়ে, স্বজন হারিয়ে, সন্তানের মাকে হারিয়ে আমি ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন শুরু করেছিলাম। যেনো আমার সন্তানের মতো কাউকে মা হারা হয়ে বেঁচে থাকতে না হয়। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এই বাংলাদেশে যেনো কাউকে সড়কে প্রাণ দিতে না হয়, নিষ্পেষিত না হয়। এই উদ্দেশ্য নিয়েই আন্দোলন শুরু করেছিলাম। এই দীর্ঘ ২৫ বছরের আন্দোলনে আমাকে অনেক বাধা বিপত্তি, মানসিক কষ্টের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও আমি দমে যায়নি।’
বলছিলেন এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের নেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। শুক্রবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর ব্যানারে আনুষ্ঠানিক মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে এ কথা বলেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
নব্বই দশকের কথা। তখন ঢাকাই চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। কিন্তু সেই সময়েই ঘটে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর ইলিয়াস কাঞ্চনের শুটিং দেখতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তার স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন। তখন তাদের একমাত্র পুত্র মীরাজুল মঈন শিশু। স্ত্রীর এমন দুর্ঘটনা মানতে পারেননি ইলিয়াস কাঞ্চন। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন। আর কাউকে স্বজন হারাতে না হয় তার জন্য নিজেই গড়ে তুলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামের সংগঠনটি। দীর্ঘ ২৫ বছর এই সংগ্রাম চালিয়ে যান তিনি। প্রিয় মানুষ হারানোর বেদনা আজও তারা করে এই মানুষটিকে। আর তাইতো সারা ঢাকা শহরে যখন নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে রাস্তায় স্কুল কলেজের ছাত্ররা, তখন ছাত্রদের সাথে সংহতি জানিয়ে তিনিও নামলেন রাস্তায়।
কোমলমতি শিশুদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের কোমলমতি শিশুরা উপলব্ধি করেছে। তারা বুঝতে পেরেছে প্রতিদিন রাস্তায় প্রিয়জনকে হারানোর চেয়ে একসঙ্গে একদিন প্রতিবাদ করে সড়ককে নিরাপদ রাখার সিদ্ধান্তই সুন্দর। আমি ২৫ বছর ধরে এ কথাটিই বলতে চেয়েছি। মানুষের সাময়িক অসুবিধা হলেও এই আন্দোলনকে ইতিবাচক ভাবে দেখতে হবে। সড়ক নিরাপদ রাখার দাবী চালিয়ে যেতে হবে। আমি শুরু থেকেই তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে এসেছি, এখনও ছাত্রদের দাবীর সাথে একাত্মতা পোষণ করছি।
বাংলাপ্রেস/আর এল