বাংলাপ্রেস ডেস্ক: শুধু স্কুলের গণ্ডি পেরিয়েছেন। জন্ম সাতক্ষীরায় নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারে। অথচ অল্প সময়ের ব্যবধানে শত শত কোটি টাকার মালিক। যার প্রায় পুরোটাই প্রতারণা করে হাতানো। আলোচিত ব্যক্তিটি রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম। প্রতারণার নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে উত্তরা থানায় ৮টিসহ রাজধানীতে মোট ৩২টি মামলা হয়েছে।
রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে রূপ বদল করেন সাহেদ করিম। যখন যে দল ক্ষমতায় সেই দলের সঙ্গে সম্পর্ক করে পাকাপোক্ত করেন রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়।
টেলিভিশনে করোনাকালের নীতিবাক্য আওরানো সাহেদ করোনা পরীক্ষার নামেই প্রতারণা করে হাতিয়েছেন প্রায় তিন কোটি টাকা। প্রতারণার কৌশল হিসেবে বিভ্ন্নি সময় নানা নামে নিজের পরিচয় দিতেন তিনি। কখনো মেজর ইফতেখার আহম্মেদ চৌধুরী, কর্নেল ইফতেখার আহম্মেদ চৌধুরী, কখনো বা মেজর শাহেদ করিম। জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম সাহেদ করিম হলেও পরিচয় দিতেন মো. সাহেদ নামে।
বিএনপির শাসনামলেও ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিলো ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার সঙ্গে। এক এগারোর সময় ২ বছর জেলে থাকাকালে সম্পর্ক হয় বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সঙ্গে। ২০১১ সালে জেল থেকে বেড়িয়ে ধানমন্ডিতে খোলেন বিডিএস ক্লিক ওয়ান নামের একটি এমএলএম প্রতিষ্ঠান। যা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।
এরপর বিডিএস কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরির নামে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে উত্তরা থানায় ৮টিসহ রাজধানীতে ৩২টি মামলা দায়ের হয়। এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল পরিচয়ে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক বিমানবন্দর শাখা থেকে ৩ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলা বিচারাধীন।
নিজের ফেইসবুকে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি প্রকাশ করে নিজেকে কেতাদূরস্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন সাহেদ করিম। তার ফেসবুক প্রোফাইলে এখনো শোভা পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা ছবি। পরিচয় দিতেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হিসেবেও।
রিজেন্ট হাসপাতাল ছাড়াও শাহেদ গড়ে তুলেছে রিজেন্ট কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, আরকেসিএস মাইক্রোক্রেডিট ও কর্মসংস্থান সোসাইটিসহ নানা প্রতিষ্ঠান। নতুন কাগজ নামের একটি পত্রিকা খুলে হয়েছেন সম্পাদকও। পরিচয় দিতেন উত্তরা মিডিয়া ক্লাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও।
সাহেদ করিমের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায়। সেখানে করিম সুপার মার্কেট নামের একটি পারিবারিক বিপণিবিতানও ছিলো সাহেদের। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। সাতক্ষীরায়ও তিনি প্রতারক হিসেবে পরিচিত।
বিপি/আর এল