আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডোমারে প্রতিবন্ধি আজিজুল ইসলাম মুন্সিকে হুইল চেয়ার উপহার দিলেন আর্ত-মানবতার সেবায় নিয়োজিত একটি অ-রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “সোহাগ সুখ পল্লী”। গত কয়েকদিন পূর্বে প্রতিবন্ধি আজিজুল ইসলাম মুন্সি (৬০) কে নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক বিভিন্ন পত্রিকায় ও অনলাইন পোর্টালে “ প্রতিবন্ধি আজিজুল ইসলাম মুন্সি হুইল চেয়ারে বসে নামাজ আদায় করতে চায়” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। বিষয়টি ডোমার সোহাগ সুখ পল্লীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিজানুর রহমান সোহোগের নজরে আসে। তাই তিনি প্রতিবন্ধি আজিজুল ইসলাম মুন্সিকে হুইল চেয়ার উপহার দেয়ার প্রতিস্রুতি ব্যক্ত করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১ অক্টোবর) বিকালে ডোমার পৌর এলাকায় কাজি পাড়ায় সোহাগ সুখ পল্লী চত্তরে প্রতিবন্ধি আজিজুল মুন্সির হাতে উপহার হিসাবে হুইল চেয়ারটি প্রদান করা হয়। এ সময় সোহাগ সুখ পল্লী’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিজানুর রহমান সোহাগ, উপদেষ্টা রাশেদুজ্জামান রাশেদ, সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার রায়, সংগঠক শুভ ভৌমিক, তপু রায়, সাংবাদিক আনিছুর রহমান মানিকসহ প্রতিবন্ধি আজিজুল মুন্সির ছেলে রুহুল আমিন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য- নীলফামারী কুখাপাড়া ওয়াবদা মোড় এলাকার মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে আজিজুল ইসলাম মুন্সি (৬০) ২০১৪ সালে দারোয়ানী থেকে অটো ভ্যানযোগে নীলফামারী আসার পথে পিক-আপ ভ্যান তাকে ধাক্কা দেয়। ঘটনা স্থলে তিনি গুরুত্বর অসুস্থ হয় এবং একটি পা টুকরো হয়ে যায়। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে দীর্ঘ ২ মাস চিকিৎসা শেষে ডাক্তার উপায় না পেয়ে তার বাম পা কেটে ফেলে। সেই থেকে তিনি ৮ বছর যাবত পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে অতি কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
স্থানীয় সাংবাদিক বিষয় জানতে পেরে সেই সংবাদ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম মুন্সি তার অনুভুতি ব্যক্ত করে বলেন, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে পা হারিয়ে আজ আমি পঙ্গু। আল্লাহকে রাজি খুশি করতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে আমার অনেক কষ্ট হয়। আজ এই হুইল চেয়ারটি পেয়ে ডোমার সোহাগ সুখ পল্লীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি। জানা যায়, ডোমারে সোহাগ সুখ পল্লীতে দীর্ঘদিন যাবত গবাদীপশু পালন, ভার্মি কম্পোস, কেঁচো সার তৈরী ও বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি পালন করে সফলতার মূখ দেখেছে। আর্ত-মানবতার সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানটি এলাকার গরিব, অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য এ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করেছে।
মধ্যবৃত্ত ও নিম্নবৃত্ত রোগীর জন্য স্বল্প খরচে এবং একদম অসহায় গরিব রোগীদের জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে ফ্রি সার্ভিস এ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এর পাশাপশী করোনা কালীন সময়ে নিজ উদ্যোগে করোনা রোগীদের জন্য ফ্রি-অক্সিজেন সেবা প্রদান করে এলাকায় ব্যপক সাড়া জাগিয়েছে। এ ছাড়াও সংগঠনটি প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার রাতে ছিন্নমূল ও ভবঘুরে অসহায় মানুষদের মাঝে খাবার পরিবেশন করে আসছে। সংগঠনটির এধরনের উদ্যোগেকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকার সচেতন মহল।
বিপি/কেজে