বোরহান মেহেদী,নরসিংদী প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালীগঞ্জে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে (৪০) আট বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে নয়ন মিয়া (৪৫) নামের এক সবজি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নয়ন ও কাজিকে আসামি করে মামলা করেছেন ওই নারী।
অভিযুক্ত নয়ন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের মাথিচর গ্রামের আমান উল্লাহর ছেলে। বর্তমানে তিনি কালীগঞ্জ পৌরসভার মুনশুরপুর এলাকায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে কালীগঞ্জ বাজারে সবজি ও ফলের ব্যবসা করেন।
অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এইচ.এম ইমন।
নির্যাতিতা শাহিদা (ছদ্মনাম) জানান, প্রথম স্বামীর সাথে তালাক হওয়ার পর তিনি বাবার বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি এনজিওতে কাজ করতেন। কাজ করার সুবাদে কালীগঞ্জ বাজারের সবজি ও ফল ব্যবসায়ী নয়নের সাথে পরিচয় হয়। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর এই প্রেমের সম্পর্ককে পুঁজি করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে নয়ন। বিয়ের ব্যাপারে চাপ দিলে আল্লাহ-খোদার কসম কেটে আবার কখনো বিভিন্ন দরবার শরীফে গিয়ে কসম কেটে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। এভাবে তাদের প্রেমের ও যৌন সম্পর্ক চলতে থাকে দীর্ঘ ৭ বছর। এর মধ্যে ভুক্তভোগী শাহিদা বিয়ের রেজিস্ট্রিসহ প্রয়োজনীয় কাজজপত্র করার কথা বললে বিয়ের নাটক সাজায় নয়ন।
ভুক্তভোগী আরও জানান, গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণসোম গ্রামের নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) মো. আবু তাহেরের বাড়িতে নয়ন ও শাহিদার বিয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে কাজী ছাড়াও রাখা হয় উকিল বাবা, মাওলানা ও সাক্ষী। সাদা কাগজে নেওয়া হয় পাত্র-পাত্রীর স্বাক্ষর। বিয়ে পড়ানো শেষে করা হয় মিষ্টি বিতরণ। পরে শাহিদাকে নিয়ে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার মুনশুরপুর, দড়িসোম, বাঙ্গালহাওলা ও গাজীপুর মহানগরীর মিরের বাজার এলাকায় বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রীর মত সংসার করেন নয়ন। এছাড়াও দীর্ঘ আট বছরে বিভিন্ন সময় নিজের ব্যবসার মন্দার অজুহাত দেখিয়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন নয়ন। এক পর্যায়ে টাকা দিতে না পারায় নয়ন তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান।
৮ অক্টোবর শুক্রবার বিকালে শাহিদা জানান, এ ব্যাপারে থানা পুলিশের ভয় দেখালে নয়ন তাকে বিয়ে করেনি বলে অস্বীকার করে। নয়ন তাকে বলে, তোকে ফুঁ দিয়ে বিয়ে করেছি ফুঁ দিয়েই আবার তালাক দিয়েছি। পারলে তুই আমার কিছু করিস। আর এ ব্যাপারে তুই যদি কারো কাছে যাস তাহলে তোকে গুম করে দিবো। এদিকে ওই কাজীর কাছে গেলে কাজীও কোনও কাগজপত্র হয়নি বলে জানায়।
এ ব্যাপারে নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) মো. আবু তাহের বলেন, ওইদিন তারা আমার বাড়িতে এসেছিল। তবে বিয়ের ব্যাপারে কোনও কাগজপত্র বা বিয়ে পড়ানো হয়নি।
অভিযুক্ত নয়ন মিয়া বলেন, তার সাথে আমার প্রেম বা বিয়ের কোনও সম্পর্ক ছিল না। তাকে বিভিন্ন সময় বাজার-সদায় ও ঔষধসহ বিভিন্ন জিনিস দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করতাম।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিসুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিপি/কেজে