জবি প্রতিনিধি: ‘এসো জ্ঞানের মশাল বয়ে নিয়ে যাই আগামীর পানে’ স্লোগানকে সামনে রেখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস- ২০২১ উদযাপন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এর উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে। এসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনষ্টিটিউটসমূহের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, রেজিস্ট্রার, হলের প্রভোস্ট, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ২০ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ২০ অক্টোবর ছুটি থাকায় আজ ২১ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২১ তথা ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়।
এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। এসময় ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, সিভিল সার্জন (ঢাকা জেলা), পরিচালক (ছাত্র-কল্যাণ), পরিচালক (আইসিটি সেল), প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
টিকা নিতে আসা উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান রাজু বলেন, প্রক্রিয়াটা খুবই ভালো ছিলো। টিকা কার্ড যারা প্রিন্ট করেনি তাদের সেটি প্রিন্ট করার ব্যবস্থা ছিলো৷ এখানে কোনো জটিলতা নেই। দক্ষতার সাথে কাজ করেছে। ভ্যাক্সিনদাতারা বেশ পারদর্শী ছিলো।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে কোভিড ১৯ টিকা ক্যাম্পের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী এবং কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের টিকা প্রদান করা হবে। শিক্ষার্থীদের উক্ত (http://student.erp.jnu.ac.bd/jnuis/student/login/view.html) লিংকে তথ্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে আগামী ২৫ থেকে ২৯ অক্টোবর শুধুমাত্র প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হবে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ডোজের টিকার সময়সূচি জানিয়ে দেয়া হবে।
এরপর বেলা ১২টায় ভার্চ্যুয়াল প্লাটফরমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক কোভিড-১৯ মহামারীতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বতস্ফূর্তভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় সকলকে ধন্যবাদ জানান।
ভার্চুয়াল সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘কেরাণীঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে ক্রয়কৃত জমিতে খেলার মাঠ এবং কিছু আবাসন ব্যবস্থার সমাধান করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বৃদ্ধি তথা গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন গবেষণা সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করা হয়েছে। এছাড়া খুব শীঘ্রই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ইনোভেশন হাবের জন্য চুক্তি করা হবে। সকল সুযোগ-সুবিধা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির একমাত্র লক্ষ্যই হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালকে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই দিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করতে পেরে আমরা আনন্দিত এবং অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ক্যাম্পাসে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। এতে করে যেসকল শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য তথ্য এখনও প্রদান করেনি, তারা ক্যাম্পাস বসেই জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গবেষণায় অনেক দূর এগিয়েছে। আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এগিয়ে যাবে। ভবিষ্যতে নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের মধ্য দিয়ে সকল ধরনের সমস্যা লাঘব হবে।’
আলোচনা সভায় রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান এর সঞ্চালনায় বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নূরে আলম আব্দুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম ও প্রক্টর বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়াও আলোচনা সভায় কর্মকর্তা সমিতি, কর্মচারী সমিতি, সহায়ক কর্মচারী সমিতিসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, ২০ অক্টোবর ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’। ২০ অক্টোবর ছুটি থাকায় ২১ অক্টাবর-২০২১ জগনাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২১ তথা ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
বিপি/কেজে