Home Uncategorized প্রশাসনিক পদ প্রত্যাহার করে জবি নীলদল একাংশের ইশতেহার ঘোষণা

প্রশাসনিক পদ প্রত্যাহার করে জবি নীলদল একাংশের ইশতেহার ঘোষণা

by বাংলাপ্রেস ডেস্ক
A+A-
Reset

জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২২ কে ঘিরে প্রশাসনিক পদ প্রত্যাহার করে নির্বাচনী ইস্তেহার ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় নীলদলের একাংশ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ- এ বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দের সংগঠন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নীলদলের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত এ ইশতেহারটি প্রকাশ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মান ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় আধুনিক জ্ঞানভিত্তিক মর্যাদাসম্পন্ন এবং প্রকৃত অর্থে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপদানকল্পে সেসব পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তা কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়ার লক্ষ্যে অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন—অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান এর নেতৃত্বে নীলদলের একাংশ এই প্যানেলের মনোনয়ন দেয়।

প্যানেলের সভাপতি সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন, সহ-সভাপতি পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম।

এই প্যানেলের সদস্য হিসেবে রয়েছেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সিদ্ধার্থ ভৌমিক, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুসাররাত শামীম, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মিরাজ হোসেন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ. এম. এম. গোলাম আদম, দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফরহাদ আহমেদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিবেদিতা রায়, মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীমা আক্তার।

অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন—অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান প্যানেল এর নির্বাচনী অঙ্গীকারে উচ্চশিক্ষা, উচ্চপদে নিয়োগ, গবেষণা বিষয়ক, চাকুরি বিষয়ক এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়। শিক্ষাছুটির মেয়াদ পাঁচ বছরে উন্নীতকরণসহ ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে সকল শিক্ষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ; মান, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সান্ধ্যকালীন কোর্সসমূহ পুনরায় চালু করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ; প্ৰতি বিভাগে দু’জন শিক্ষককে সম্মানীসহ ছাত্র উপদেষ্টা নিয়োগকরণ; শিক্ষক লাউঞ্জের আধুনিকায়ন ও শিক্ষক ক্যান্টিন পুনঃচালুকরণ; শিক্ষকদের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত ক্লাব প্রতিষ্ঠাকরণ; সকল রুটে পূর্ণাঙ্গ দ্বিতীয় শিফট এবং সান্ধ্যকালীন পরিবহণ সুবিধা পুনঃচালুকরণ এবং শিক্ষার্থীদেরও পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী কমপক্ষে দুই মাস অন্তর সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠানসহ আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন এবং যুগোপযোগীকরণ; একাডেমিক কাউন্সিলে প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক স্তরে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ; বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান ক্যাম্পাসের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকরণসহ নতুন বা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের উন্নয়ন কাজকে ত্বরান্বিত করা। এছাড়াও “অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন—অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান প্যানেল নির্বাচিত হলে শিক্ষকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়ার লক্ষ্যে নির্বাচিত সদস্যরা প্রশাসনিক পদ গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন বলে অঙ্গীকারবদ্ধ হোন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজের কথা তাদের নির্বাচনী ইস্তেহারে উল্লেখ করা হয়। নীলদলের একাংশের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম ও সদস্য সচিব রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দ আলম। এই অংশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দিন, সাবেক কোষাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ শওকত জাহাঙ্গীর, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল কাদের, সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামানসহ নির্বাচনে পদপ্রার্থী ও নীলদলের একাংশে সিনিয়র শিক্ষকরা রয়েছেন।

এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, আমরা এই প্রশাসনকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। অতীতের যে ভুলভ্রান্তিগুলো হয়েছে, সেগুলো পূরণ করে এবং সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে সবার সহযোগিতায় এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। সবাই যদি আমাদের সহযোগিতা করেন তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কালচার আনার চেষ্টা করবো। একটি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কালচার সেটা অনেক আলাদা। সাইনবোর্ড চেঞ্জ করে আমরা একটা কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়েছি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কালচার সেটা আসতে কিন্তু অনেক সময় লাগে। আমরা সেই ধরণের কালচার তৈরির জন্য একটা প্যানেল দিয়েছি। আমরা আমাদের ইশতেহার বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান বলেন, আমরা যে ইস্তেহার দিয়েছি, সেগুলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্রসমাজ এবং সবারই কল্যাণ হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যদি আরো ভালোর দিকে যায়, তাহলে ছাত্র হিসেবেও সেটা সবার জন্যই গর্বের হবে। আমি চাই সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের যে নির্বাচনী অঙ্গীকার সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারবো এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনের দিকে বিশ্বমানের উন্নীত করা প্রচেষ্টা আমাদের থাকবে ও সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করবো।

নীলদলের একাংশের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণের কথা ভাবি আমাদের শিক্ষার্থীরাও কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণের কথা ভাবে। আমাদের ভাবনার সাথে যদি তাদের ভাবনার একটা মেলবন্ধন না ঘটে তাহলে কিন্তু সত্যিকারের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কালচার গড়ে উঠবেনা। কারণ এখন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী সে কিন্তু একসময় আমার সহকর্মী হবে। সেহেতু আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে উন্নয়ন সেক্ষেত্রে ছাত্র-শিক্ষকের ভাবনার মেলবন্ধন থাকা দরকার। আর আমাদের এখানে নানা কারণে সেটা গড়ে উঠেনা। আমাদের আবাসিক হল নেই, টিএসসি নেই, অনেক কিছুই নেই কিন্তু যা নেই সেটা তো নেই। সেটা কিভাবে পেতে পারি তার জন্য ইতিবাচক ভাবনা জরুরি।

নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সুরঞ্জন কুমার দাস বলেন, নির্বাচন ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিক তালিকা আমরা ইতিমধ্যে প্রকাশ করেছি। শিক্ষক সমিতির কার্যালয়কে নির্বাচন কমিশনের অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে নির্বাহী ৫ টি পদের জন্য ২ জন করে আর সদস্য পদের জন্য ১০ টি পোস্টের বিপরীতে ২২ জন পদপ্রার্থী ছিলো। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) ছিলো প্রার্থীতা প্রত্যাহার এর শেষ দিন। আজকে দুই জন সদস্য প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছে। এখন সদস্য পদের জন্য ২০ জন আর নির্বাহী পদের জন্য প্রতি পদে দুই জন করে প্রার্থী রয়েছে। চুড়ান্ত প্রার্থীদের নাম বুধবার (৩ নভেম্বর) প্রকাশ করা হয়।

তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত আমার কাছে কারও কোনো অভিযোগ আসেনি। সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভা অনুযায়ী যেসব শিক্ষকের নামের তালিকা প্রকাশ হয়েছে, তারাই ভোট দিতে পারবেন।

এর আগে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ৩১ অক্টোবর প্রকাশ করা হয়েছে। ২৭ ও ২৮ অক্টোবর মনোনয়ন কেনা ও জমা দেয়ার শেষ সময় ছিলো।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২২ মাস পর আগামী ৮ নভেম্বর শিক্ষক সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রত্যেক প্যানেল দল মত নির্বিশেষে সাদা দল, নীলদলের উভয় অংশের শিক্ষকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাচ্ছেন।

বিপি/কেজে

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী