গাইবান্ধা প্রতিনিধি: বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসকেএস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় মেকিং মার্কেটস্ ওয়ার্ক ফর দি চরস্ (এমফোরসি) প্রকল্পের উদ্যোগে কৃষি উপকরণ পরিবেশক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২১ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার রাধাকৃষ্ণপুরে এসকেএস ইন্ এর জলধারা মিলনায়তনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং সুইজারল্যান্ডের সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশনের আর্থিক সহায়তায় এমফোরসি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সুইস কন্টাক্ট বাংলাদেশ ও বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি। এতে সহযোগি সংস্থা হিসেবে কাজ করছে এসকেএস ফাউন্ডেশন। সম্মেলনে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার চরাঞ্চলে কৃষি পণ্য সরবরাহকারী ২২ জন পরিবেশক এবং কৃষি পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ২১ জন কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
পরিচয়পর্বের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। পরে এমফোরসি প্রকল্পের ইন্টারভেনশন স্পেশালিস্ট মো. হাফিজার রহমান শেখের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সুইস কন্টাক্ট বাংলাদেশের এমফোরসি প্রকল্পের পার্টনারশীপ অ্যান্ড গ্রান্ট বিভাগের ম্যানেজার ইয়াছির আরাফাত। এরপর মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন ইয়াছির আরাফাত।
আরও বক্তব্য দেন সুইস কন্টাক্ট বাংলাদেশের এমফোরসি প্রকল্পের ইন্টারভেনশন এরিয়া ম্যানেজার মো. রবিউল হাসান, অটোক্রপ কেয়ার লিমিটেড বগুড়ার বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সালাম, এগ্রিপ্লাস লিমিটেডের জোনাল সেলস ম্যানেজার মো. মশিউর রহমান, মিমপেক্সের রিজিওনাল সেলস ম্যানেজার মো.নাজিরুল ইসলাম, এসিআই ক্রপ কেয়ার লিমিটেডের এরিয়া সেলস ম্যানেজার মো. সিরাজুল ইসলাম, এআর মালিক সীডস লিমিটেডের এরিয়া ম্যানেজার মো. রবিউল ইসলাম, সেমকো-নাফকোর এরিয়া সেলস ম্যানেজার ইবনুল কাওসার, বায়ার ক্রপ সাইন্সের সিনিয়র টেরিটরি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক, অটো ক্রপ কেয়ার লিমিটেডের টেরিটরি কর্মকর্তা গুল মোহাম্মদ মুঘল (দুলাল), পরিবেশক হায়দার আলী ও সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। বক্তারা বলেন, এমফোরসি প্রকল্প শুরুর আগে চরাঞ্চলে তেমন ভালোমানের কোম্পানীর বীজ ও কীটনাশক ব্যবহার করতো না।
কেননা কৃষকরা দোকানে গিয়ে ফসলের বিভিন্ন রোগ ও ভাইরাসের কথা বললে- দোকানদার যে কোম্পানীর উপকরণে বেশি লাভ পেতেন, সেই কোম্পানীর কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক দিতেন। এতে করে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় কৃষকরা ফসল উৎপাদন করে তেমনভাবে সফল হতেন না। তাদের টাকা অপচয় হতো ঠিকই কিন্তু সংসারে স্বচ্ছলতা আসতো না। তারা কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছিল। এসময় এমফোরসি প্রকল্প তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ভালোমানের কোম্পানীর কৃষি উপকরণ সম্পর্কে জানানো ও চরে ভালোমানের কৃষি পণ্য কৃষকের দোড়গোড়ায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে।
এতে করে কৃষকরা লাভবান হন। এমফোরসি প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানী ও মোল্লারচর ইউনিয়ন, সুন্দরগঞ্জের বেলকা, কাপাশিয়া, হরিপুর ও তারাপুর, ফুলছড়ির গজারিয়া, ফুলছড়ি, ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ী, উড়িয়া ও কঞ্চিপাড়া এবং সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ও হলদিয়া ইউনিয়নের ১২৯টি চরে কাজ করছে। এতে সুবিধাভোগী রয়েছে ওইসব চরের ৫৪ হাজার ২০০ পরিবার। চরাঞ্চলে ধান, পাট, বাদাম, সরিষা, ভুট্টা, মরিচ, মাসকালাই বেশি চাষাবাদ হয়ে থাকে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে চরাঞ্চলে অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তির প্রয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া কৃষকরা কৃষি উপকরণ ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিটি ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে সাফল্যজনক অবদান রাখছে।
এতে চরাঞ্চলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। যা রাষ্ট্রীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
অটো ক্রপ কেয়ার লিমিটেড, এসিআই ক্রপ কেয়ার, সেমকো-নাফকো, পেট্রোকেম বাংলাদেশ লিমিটেড, সিনজেনটা লিমিটেড, বায়ার ক্রপ সাইন্স, ইনতেফা, এসিআই গোদরেজ, ইস্পাহানি, এআর মালিক সীডস, মিমপেক্স, এগ্রিপ্লাস, ইউনাইটেড সীডস লিমিটেডসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান চরাঞ্চলে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে আসছে।
বিপি/কেজে