আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি: উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী ও পঞ্চগড় জেলায় শীতের প্রকোপ বরাবরেই বেশী। পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া বাংলাবান্ধা ও ডোমার উপজেলার চিলাহাটির পাশে ভারতের হিমালয় পর্ব্বত অতি নিকটে।
কার্তিকের শেষে এবং অগ্রাহনের শুরুতে পার্শবর্তি দেশ ভারতের কাঞ্চনজঙা ও ডার্র্জিলিং পাহাড় হাতছানি দিয়ে ডাকে শীতের আগাম বার্তা নিয়ে। যার কারণে এই এলাকায় আগাম শীত জেগে বসেছে। শীত নিবারণে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে লেপ-তোষক কারিগররা। তাদের পাশাপাশি বেশ লাভে আছেন পাইকারী মহাজনী ব্যবসায়ীরাও। মাত্র ২/৩ মাসের শীত মৌসুমে ডোমার উপজেলাসহ জেলার হাজারো দক্ষ কারিগর লেপ-তোষক তৈরি করে পারিশ্রমিকের সঞ্চয় দিয়েই চালান সারা বছরের সংসার।
শীত মৌসুম এলেই নতুন নতুন লেপ- তোষক তৈরি করে শীত নিবারণ করে থাকেন শীত প্রবণ এলাকা বলে পরিচিত উত্তর জনপদের নীলফামারী জেলাবাসী। এ জেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারে বসে নানা রকমের তুলাসহ লেপ-তোষকের দোকান। এসব দোকানে লেপ-তোষক তৈরির কারিগররাও আসেন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে। সারা বছর শেষে মাত্র শীতের ক’মাসই তাদের একটু বাড়তি আয়, আর তা দিয়েই তারা চালান সংসারের ভরণ-পোষণ। স্বাভাবিক কারণে এই ক’মাস বেশ কেনা-বেচাও হয় লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে।
লেপ তৈরি করতে আসা ক্রেতা মাহিগঞ্জ এলাকার বাবুল হোসেন জানান, শীতের কারণে লেপ-তোষকের কারিগররা খুব ব্যস্ত, বেশি বেশি লেপ-তোষক তৈরি করছেন সাধারণ মানুষ। এ কারণে প্রকার ভেদে লেপ-তোষকের দামেরও কম-বেশি হচ্ছে। তবে অন্যান্ন বছরের তুলনায় এবার তুলার দাম বেশি মনে হচ্ছে। চিলাহাটি সড়ক শালকী ব্রিজ এলাকার শহীদ বেডিং হাউজের স্বত্বাধীকারী মোঃ শহীদ ইসলাম জানান, ডবল লেপ ১ হাজার টাকা, সিঙ্গেল লেপ ৫ শত ২০ টাকা, বাচ্চাদের লেপ ২ শত ৫০ টাকা, তোষক ২ হাজার থেকে ২২ শত টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দিন- দিন জিনিষপত্রের দাম বেশি হওয়ায় লেপের দাম বেড়ে গেছে।
অগ্রাহণ, পৌষ ও মাঘ এই ৩ মাসে আমাদের মোটামুটি ভাল ব্যবসা হয়। বাকি সময়গুলো বসে থেকে কাটাতে হয়। তখন মাঝেমধ্যে তোষক ও জাজিমের কাজ হয়। তুলা বাদে লেপ-তোষক তৈরির মজুরি ১ শত ৫০ টাকা থেকে ৩ শত ৫০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকি। বর্তমানে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫টি অর্ডার পাচ্ছি। পৌষ ও মাঘ মাসে ৮ থেকে ১০ টি অর্ডার হয়। ডোমার বাজার বাটার মোড় এলাকার খাজা আজমেরী বেডিং হাউজের দোকানী কিবরিয়া বলেন, শীতের ৩ মাস ধুনাই কারিগরের চাহিদা বেশী। বাকি সময় তাদের কেউ অন্য পেশায় চলে যান, আবার শীত চলে গেলে হয়ে পড়েন বেকার। তখন অল্প সংখ্যক কারীগরদের কাজ জোটে শুধু তোষক আর বালিশ তৈরিতে। আমাদের এই শিল্পকে ধরে রাখতে সরকারের পাশাপাশী বিসিক এর মাধ্যমে সহায়তা কামনা করেন এলাকার অনেক ধুনাইকারক দোকানী।
বিপি/কেজে