বাংলাপ্রেস ডেস্ক: শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পাস করে চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের উদ্যোক্তা হতে হবে এবং অন্যকে চাকরি দেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে হবে।’
রোববার ৯ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা-২০২১’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে তিনি গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, তরুণ সমাজকে শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছি। কারিগরি শিক্ষা ও ভোকেশনাল ট্রেনিংয়েরও সুযোগ করে দিয়েছি। পাশপাশি কম্পিউটার ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে সব রকম ব্যবসা বাণিজ্য যাতে করতে পারে সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যুব সমাজের কল্যাণে স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিচ্ছে এবং এজন্য বাজেটে আলাদা টাকাও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কাজেই উদ্যোক্তা হতে চাইলে যে কেউ হতে পারে। উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন ব্রডব্যান্ড সুবিধা প্রায় ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, মোবাইল ফোন সবার হাতে হাতে পৌঁছে গিয়েছে।
ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে যোগাযোগ খুব সহজ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্রয়-বিক্রয়, পণ্যমান সবকিছু জানার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাজার সম্পর্কে জানা ও বাজারের চাহিদা ও পণ্যের মূল্য সম্পর্কে জানার সুযোগ হচ্ছে। যার ফলে আমি মনে করি, মানুষের আর কষ্ট করার কোন অর্থ হয় না। একটু স্ব-উদ্যোগে কাজ করলেই কিন্তু নিজেরা উদ্যোক্তা হতে পারেন এবং নিজেরা কাজ করতে পারেন।
মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করে সরকার প্রধান বলেন, আজকে শতভাগ বিদ্যুৎ যখন দেয়া হচ্ছে পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন আমরা করে দিয়েছি। একই জায়গায় বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি থাকে তবে সেখানে পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণে কোন সমস্যা হয়না।
আমাদের দেশে কাঁচামালের সহজলভ্যতা রয়েছে, সেই বিবেচনাতেও দেশে শিল্প গড়ে উঠতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতে করে আমার নিজের দেশে যেমন বাজার সম্প্রসারণ হচ্ছে এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ছে সেইসাথে বিদেশেও আমরা রপ্তানী করতে পারবো, আমাদের রপ্তানী পণ্য বৃদ্ধি পাবে। সেজন্য আমাদের পণ্যগুলো যাতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
মারাত্মক করোনাভাইরাস আক্রমণের কারণে ১৯ মাস বিরতির পর এসএমই ফাউন্ডেশন এই মেলার আয়োজন করেছে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে শেষ এসএমই মেলার আয়োজন করেছিল যখন দেশে করোনভাইরাস সংক্রমণের প্রথম কয়েকটি কেস শনাক্ত হওয়ার পরে দ্রুত গুটিয়ে যায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিশেষ অতিথি এবং অনুষ্ঠানে সভাপতি শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জাতীয় এসএমই পুরস্কার ২০২১ বিজয়ী চার উদ্যোক্তার হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও চেক তুলে দেন।
বিশেষ অতিথি এবং আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ড. মো. মাসুদুর রহমান বক্তৃতা করেন।
বিপি/কেজে