রমজান আলী টুটুল সৈয়দপুর(নীলফামারী) প্রতিনিধি: ট্রেডিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি) এর মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে পন্য বিক্রি কার্যক্রমে নীলফামারীর সৈয়দপুরে চলছে হরিলুট কারবার। কৌশলে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কার্ড কেড়ে নিয়ে গোপনে অন্যের কাছে বিক্রি করেছে মেম্বার ও চেয়ারম্যান। কমিশন পেয়ে এই অনিয়মে সহযোগীতা করেছে ডিলার ও সরকারী ট্যাগ অফিসার। ফলে কার্ডধারী হয়েও মাল পায়নি অনেকে। অথচ কার্ডধারী না হয়েও অনেকেই একাই একাধিক কার্ডের মাল তুলে খাচ্ছে দুইমাস ধরে।
এমনই চিত্র উঠে এসেছে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবি’র মাসিক পন্য বিতরণকালে। রবিবার (৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে কার্ডধারী হয়েও মাল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত শতাধিক দরিদ্র অসহায় খেটে খাওয়া মানুষ বিক্ষোভ করেছে। এসময় তারা জানায়, চার মাস আগে মাল নেয়ার সময় তাদের কার্ড ডিজিটাল করার কথা বলে জমা নেয় ডিলার।
কিন্তু আজও তাদের কার্ড ফেরত দেয়া হয়নি। মাঝে একবার মাল দিয়েছে এবং আজ আবার দিচ্ছে। কার্ড না পাওয়ায় তারা টাকা থাকতেও মাল নিতে পারছেননা। অথচ ডিলার বলছে গতবার সব কার্ডের মালই দেয়া হয়েছে। এবারও দেয়া হবে। তাহলে আমাদের কার্ড ও মাল কোথায়? কে বা কারা তা তসরুপ করেছে? কেন করেছে? আমরা এই অনিয়ম ও হয়রানীর বিচার চাই।
সেখানে দেখা যায়, ডিলারের লোকজন তালিকার সাথে যেমন কার্ড মিলিয়ে দেখছেননা তেমনি যে ব্যক্তি কার্ড নিয়ে এসেছেন তিনি প্রকৃতই কার্ডধারী কি না তাও যাচাই করছেননা। ফলে এক ব্যক্তিই একাধিক কার্ডের মাল তুলছে। এসময় মাল বিতরণকারী ডিলার প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাফা স্টোরের ম্যানেজার সাবু বলেন, কার্ডধারী নিজের কার্ড দিয়ে মাল নিচ্ছে না অন্যেরটা দিয়ে নিচ্ছে তা দেখা আমাদের দায়িত্ব না। কার্ডের মালিক নিশ্চিত করা আমাদের কাজ নয়। ওটা দেখবে ট্যাগ অফিসার।
তিনি আরও বলেন, আমরা যার কাছে কার্ড পাবো তাকেই মাল দিবো। মাল দিয়ে আমরা কার্ড জমা নিয়ে চেয়ারম্যানকে বুঝিয়ে দেই। তিনি যাচাই বাছাই করে সুবিধাভোগীদের মাঝে আবার বিতরণ করেন। তাতে কেউ কার্ড না পেয়ে থাকলে তাতে আমাদের কিছুই করার নাই। আমরা বরাদ্দকৃত ৪২২০ টি কার্ডের বিপরীতে ২ লিটার করে ভোজ্য তেল, চিনি ও মসুর ডাল যথাযথভাবে বিতরণ করেছি। কেউ কার্ড অনুযায়ী মাল না পেয়ে থাকলে দায় আমাদের। তবে কার্ড পাওয়া না পাওয়া চেয়ারম্যান মেম্বারদের বিষয়।
এদিন ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দপুর উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসার আবু জাফর উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি তাঁর অফিসে গেলে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি দ্রুত সটকে পড়েন। পরে তাঁর মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ না করায় তাঁর মতামত জানা সম্ভব হয়নি।
ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সোনাখুলী মুন্সিপাড়ার মৃত এছার উদ্দীনের ছেলে মহুবার হোসেন, মোজাহারুল, মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে আজিজুল, মাহতাবের ছেলে রবিউল, বকপাড়ার সামসুল হকের ছেলে মুসলিম বলেন, চারমাস আগে কার্ড জমা নিলেও ফেরত দেয়া হয়নি। তাই দুইবার মাল দেয়া হয়েছে আমরা নিতে পারিনি। একইভাবে ১ নং ওয়ার্ডের হাজীপাড়ার শেখ মমতাজের স্ত্রী রুবিনা, ৮ নং ওয়ার্ডের সমসের, আরমানও কার্ড ও মাল না পাওয়ার অভিযোগ করেন।
তারা সবাই বলেন, কার্ড উলট পালট করা হয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় ১০ থেকে ১৫ জনের কার্ড ৪ মাস থেকে আটকে রেখে মাল গোপনে চোরাবাজারে বিক্রি করা হয়েছে। মেম্বার চেয়ারম্যান কার্ড বিক্রি করে খেয়েছে। আমরা বঞ্চিত হয়েছি। এখন বলছে নতুন করে কার্ড বানিয়ে দিবে। কিন্তু গত দুইবারের মাল কে বা কারা খেলো তাদের কোন বিচার নাই। এই দূর্নীতির সাথে সবাই জড়িত। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই।
৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হারুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ডিলার কার্ড জমা নিয়ে চেয়ারম্যান কে দিয়েছে। চেয়ারম্যান আমাদের কে যে কার্ড দিয়েছে তা আমরা বিলি করেছি। এতে ই না পেয়ে থাকলে তা আমার দেখার বিষয় নয়। কার্ড কোথায়, কে মাল তুলেছে তাও জানিনা। তা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথাও নাই। চেয়ারম্যান জানেন কি করবেন।
ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জুন বলেন, এত কার্ড নাম ধরে ধরে সিরিয়াল করে বিতরণ সম্ভব নয়। তাছাড়া কার্ডের নাম নম্বর বা ঠিকানা ঠিকভাবে নাই। তাই বিতরণে একটু হেরফের হয়েছে। তাই দৃুইমাস হয়তো একজনের কার্ড অন্যজন পেয়ে মাল তুলে নিয়েছে। আবার কেউ কেউ কার্ড পেয়েও অস্বীকার করে মেম্বারদের চাপ দিয়ে একাধিক কার্ড নিয়ে তসরুফ করেছে। তবে সৈয়দপুরে টিসিবিতে চলছে হরিলুট, কার্ড বিক্রিতে মত্ত চেয়ারম্যান মেম্বার, কমিশন খাচ্ছে ডিলার
ট্রেডিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি) এর মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে পন্য বিক্রি কার্যক্রমে নীলফামারীর সৈয়দপুরে চলছে হরিলুট কারবার। কৌশলে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে কার্ড কেড়ে নিয়ে গোপনে অন্যের কাছে বিক্রি করেছে মেম্বার ও চেয়ারম্যান। কমিশন পেয়ে এই অনিয়মে সহযোগীতা করেছে ডিলার ও সরকারী ট্যাগ অফিসার। ফলে কার্ডধারী হয়েও মাল পায়নি অনেকে। অথচ কার্ডধারী না হয়েও অনেকেই একাই একাধিক কার্ডের মাল তুলে খাচ্ছে দুইমাস ধরে।
এমনই চিত্র উঠে এসেছে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবি’র মাসিক পন্য বিতরণকালে। রবিবার (৯ এপ্রিল) সকালে উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে কার্ডধারী হয়েও মাল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত শতাধিক দরিদ্র অসহায় খেটে খাওয়া মানুষ বিক্ষোভ করেছে। এসময় তারা জানায়, চার মাস আগে মাল নেয়ার সময় তাদের কার্ড ডিজিটাল করার কথা বলে জমা নেয় ডিলার।
কিন্তু আজও তাদের কার্ড ফেরত দেয়া হয়নি। মাঝে একবার মাল দিয়েছে এবং আজ আবার দিচ্ছে। কার্ড না পাওয়ায় তারা টাকা থাকতেও মাল নিতে পারছেননা। অথচ ডিলার বলছে গতবার সব কার্ডের মালই দেয়া হয়েছে। এবারও দেয়া হবে। তাহলে আমাদের কার্ড ও মাল কোথায়? কে বা কারা তা তসরুপ করেছে? কেন করেছে? আমরা এই অনিয়ম ও হয়রানীর বিচার চাই।
সেখানে দেখা যায়, ডিলারের লোকজন তালিকার সাথে যেমন কার্ড মিলিয়ে দেখছেননা তেমনি যে ব্যক্তি কার্ড নিয়ে এসেছেন তিনি প্রকৃতই কার্ডধারী কি না তাও যাচাই করছেননা। ফলে এক ব্যক্তিই একাধিক কার্ডের মাল তুলছে। এসময় মাল বিতরণকারী ডিলার প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাফা স্টোরের ম্যানেজার সাবু বলেন, কার্ডধারী নিজের কার্ড দিয়ে মাল নিচ্ছে না অন্যেরটা দিয়ে নিচ্ছে তা দেখা আমাদের দায়িত্ব না। কার্ডের মালিক নিশ্চিত করা আমাদের কাজ নয়। ওটা দেখবে ট্যাগ অফিসার।
তিনি আরও বলেন, আমরা যার কাছে কার্ড পাবো তাকেই মাল দিবো। মাল দিয়ে আমরা কার্ড জমা নিয়ে চেয়ারম্যানকে বুঝিয়ে দেই। তিনি যাচাই বাছাই করে সুবিধাভোগীদের মাঝে আবার বিতরণ করেন। তাতে কেউ কার্ড না পেয়ে থাকলে তাতে আমাদের কিছুই করার নাই। আমরা বরাদ্দকৃত ৪২২০ টি কার্ডের বিপরীতে ২ লিটার করে ভোজ্য তেল, চিনি ও মসুর ডাল যথাযথভাবে বিতরণ করেছি। কেউ কার্ড অনুযায়ী মাল না পেয়ে থাকলে দায় আমাদের। তবে কার্ড পাওয়া না পাওয়া চেয়ারম্যান মেম্বারদের বিষয়।
এদিন ট্যাগ অফিসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দপুর উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসার আবু জাফর উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি তাঁর অফিসে গেলে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি দ্রুত সটকে পড়েন। পরে তাঁর মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ না করায় তাঁর মতামত জানা সম্ভব হয়নি।
ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সোনাখুলী মুন্সিপাড়ার মৃত এছার উদ্দীনের ছেলে মহুবার হোসেন, মোজাহারুল, মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে আজিজুল, মাহতাবের ছেলে রবিউল, বকপাড়ার সামসুল হকের ছেলে মুসলিম বলেন, চারমাস আগে কার্ড জমা নিলেও ফেরত দেয়া হয়নি। তাই দুইবার মাল দেয়া হয়েছে আমরা নিতে পারিনি। একইভাবে ১ নং ওয়ার্ডের হাজীপাড়ার শেখ মমতাজের স্ত্রী রুবিনা, ৮ নং ওয়ার্ডের সমসের, আরমানও কার্ড ও মাল না পাওয়ার অভিযোগ করেন।
তারা সবাই বলেন, কার্ড উলট পালট করা হয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় ১০ থেকে ১৫ জনের কার্ড ৪ মাস থেকে আটকে রেখে মাল গোপনে চোরাবাজারে বিক্রি করা হয়েছে। মেম্বার চেয়ারম্যান কার্ড বিক্রি করে খেয়েছে। আমরা বঞ্চিত হয়েছি। এখন বলছে নতুন করে কার্ড বানিয়ে দিবে। কিন্তু গত দুইবারের মাল কে বা কারা খেলো তাদের কোন বিচার নাই। এই দূর্নীতির সাথে সবাই জড়িত। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই।
৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হারুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ডিলার কার্ড জমা নিয়ে চেয়ারম্যান কে দিয়েছে। চেয়ারম্যান আমাদের কে যে কার্ড দিয়েছে তা আমরা বিলি করেছি। এতে কেউ না পেয়ে থাকলে তা আমার দেখার বিষয় নয়। কার্ড কোথায়, কে মাল তুলেছে তাও জানিনা। তা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথাও নাই। চেয়ারম্যান জানেন কি করবেন।
ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জুন বলেন, এত কার্ড নাম ধরে ধরে সিরিয়াল করে বিতরণ সম্ভব নয়। তাছাড়া কার্ডের নাম নম্বর বা ঠিকানা ঠিকভাবে নাই। তাই বিতরণে একটু হেরফের হয়েছে। তাই দৃুইমাস হয়তো একজনের কার্ড অন্যজন পেয়ে মাল তুলে নিয়েছে। আবার কেউ কেউ কার্ড পেয়েও অস্বীকার করে মেম্বারদের চাপ দিয়ে একাধিক কার্ড নিয়ে তসরুফ করেছে। তবে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে যার যার কার্ড তাদের বুঝিয়ে দেয়া হবে।
একটি সূত্রের অভিযোগ, চেয়ারম্যান মেম্বাররা কৌশল করে ডিলারের মাধ্যমে কার্ড জমা নিয়ে ইচ্ছেকৃতভাবে অনেকের কার্ড আটকে দিয়ে সেগুলো বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করেছে বা নিজেদের লোকজনকে দিয়ে মাল তুলে নিয়ে বিক্রি করেছে। অথবা অন্যদের খুশি করতেও দৃুইমাসের জন্য দিয়েছেন।
এভাবে প্রায় ২ হাজার কার্ডপ্রতি প্রায় ১শ’ থেকে ২ শ’ টাকা করে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। যা অন্যায় ও অবৈধ। এতে ডিলার ও ট্যাগ অফিসারও জড়িত। তাই তারা মাল প্রদানে নিয়ম মানছেননা। ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই পোড়ারহাট বাজারে এক ব্যবসায়ীর কাছে এই বিক্রিত মাল মজুদ রয়েছে। এই সমস্যার সমাধান করে যার যার কার্ড তাদের বুঝিয়ে দেয়া হবে।
একটি সূত্রের অভিযোগ, চেয়ারম্যান মেম্বাররা কৌশল করে ডিলারের মাধ্যমে কার্ড জমা নিয়ে ইচ্ছেকৃতভাবে অনেকের কার্ড আটকে দিয়ে সেগুলো বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করেছে বা নিজেদের লোকজনকে দিয়ে মাল তুলে নিয়ে বিক্রি করেছে। অথবা অন্যদের খুশি করতেও দৃুইমাসের জন্য দিয়েছেন।
এভাবে প্রায় ২ হাজার কার্ডপ্রতি প্রায় ১শ’ থেকে ২ শ’ টাকা করে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। যা অন্যায় ও অবৈধ। এতে ডিলার ও ট্যাগ অফিসারও জড়িত। তাই তারা মাল প্রদানে নিয়ম মানছেননা। ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই পোড়ারহাট বাজারে এক ব্যবসায়ীর কাছে এই বিক্রিত মাল মজুদ রয়েছে।
বিপি/কেজে