Home বাংলাদেশরংপুর সৈয়দপুর রেল কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ, সাংবাদিক প্রবেশে বাধা

সৈয়দপুর রেল কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ, সাংবাদিক প্রবেশে বাধা

by বাংলাপ্রেস ডেস্ক
A+A-
Reset

রমজান আলী টুটুল, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: সৈয়দপুর রেলওয়ে বিভাগের বিদ্যুত অফিসের মিটার রিডার ফারুক হোসেন কে অন্যায়ভাবে নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকরা। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় রেলওয়ে কারখানার বিভিন্ন সপ (উপ-কারখানা) থেকে মিছিল বের করে বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) এর কার্যালয়ের সামনে এসে সমাবেশ করে।

এসময় রেলওয়ে শ্রমিকলীগ নেতৃবৃন্দ এসে সাধারণ শ্রমিকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, রেলওয়ে শ্রমিকলীগ কারখানা শাখার সভাপতি নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সম্পাদক ছালেহ উদ্দিন ও ওপেন লাইন শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।

বক্তারা অভিযুক্ত বিভাগীয় বিদ্যুত প্রকৌশলী (ডিইই) খায়রুল ইসলামের বিচার দাবী করে বলেন, অবিলম্বে তাঁকে বদলী করাসহ বিভাগীয়ভাবে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। একইসাথে শ্রমিকদের বার্ষিক পোশাক ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দ্রব্যাদি প্রাপ্তি এবং চিকিৎসা ভাতা প্রদানে গাফলতি দূর করে সহজলভ্য ও নির্ধারিত সময়ে প্রদান নিশ্চিত করার দাবী তুলে ধরেন।

পরে রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান সমাবেশে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি শ্রমিকদের দাবীসমুহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেন। শ্রমিকরা এতে অসন্তোষ প্রকাশ করে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানায় এবং আজকেই ডিইই খায়রুল ইসলামকে কারখানা থেকে প্রত্যাহার তথা বদলীর দাবী জানায়।

এতে ডিএস বলেন, এটা আমার এখতিয়ারে নেই। এইকারণে বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে যাওয়ায় রেলওয়ে শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় নেতা ও সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিনের উপর ন্যস্ত করা হয়। তিনি আগামী বুধবার ঢাকা থেকে আসার পর অন্যান্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ও কারখানার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

জানা যায়, গত শনিবার বিভাগীয় বিদ্যুত প্রকৌশলী খায়রুল ইসলাম তার অফিসে মিটার রিডার ফারুক হোসেনকে ডেকে নিয়ে দীর্ঘ ৩ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় প্রতিবাদ করায় জুতা খুলে ফারককে বেদম মারপিট করা হয়। এমন অপ্রীতিকর ঘটনা জানাজানি হলে শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ দানা বাধে এবং রবিবার তারা বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলে প্রশাসনিকভাবে বাধা দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে শ্রমিকলীগ নেতৃবৃন্দের সহযোগীতায় আজ তারা এই কর্মসূচী পালন করে।

বিভাগীয় বিদ্যুত প্রকৌশলী খায়রুল ইসলাম বলেন, মিটার রিডার ফারুক তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেননা। তিনি মিটারের বিল রিডিং এ নয়ছয় করার কারণে আমার রেলওয়ের বাসভবনের বিদ্যুতের বিল প্রতিমাসে অতিরিক্ত আসে। অথচ আমার চেয়েও বেশি ইলেকট্রিক সামগ্রী থাকার পরও অন্যান্য কর্মকর্তার বিল কম আসে। এতে আমার ব্যবহৃত বিদ্যুতের মূল্য অতিরিক্ত কর্তন করা হচ্ছে।

এনিয়ে ফারুক কে জিজ্ঞেসা করায় সে অসদাচরণ করে। ফলে আমি তার বিরুদ্ধে চাকুরী বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের উদ্যোগ নিয়েছি। এজন্য সে আমাকে নানা হুমকি ধামকি দেয়ায় অফিসে বসিয়ে রেখে জবাবদিহি করায় নিজের অপকর্ম আড়াল করতে তাকে মারধরের ভূয়া অভিযোগ তুলে আমাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করছে।

তবে এবিষয়ে নির্যাতনের শিকার ফারুক হোসেন গণমাধ্যমে কোন কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এমনকি সংবাদকর্মীদের দেখে তিনি একরকম পালিয়ে যান। একইভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলাকালে সংবাদমাধ্যম কর্মীরা কারখানায় গেলে মূল ফটক (গেট) বন্ধ করে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়। গেটে দায়িত্বরত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএবি) সদস্য তোতা জানান সাংবাদিক প্রবেশে কর্তৃপক্ষের নিষেধ আছে।

এসময় গেটের বাইরে থেকে ছবি তুলতে বা ভিডিও ধারণ করতে গেলে ওই নিরাপত্তাকর্মী ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের অনেকে বাধা দেন। এতে সংবাদকর্মীরা কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএসডাব্লিউ) ও কর্ম ব্যবস্থাপক (ডাব্লিউ এম) কে বার বার মুঠোফোনে কল দিলেও তাঁরা রিসিভ করেননি। এমনকি শ্রমিকদের কর্মসূচী শেষেও তাঁরা মোবাইল কল না ধরায় তাদের মন্তব্য জানা যায়নি।

শ্রমিক নেতৃবৃন্দও কেউ মুখ খুলতে চাননি। মিডিয়াকে তাঁরা এড়িয়ে যান। ফলে সংবাদকর্মীসহ আশপাশের ছুটে আসা লোকজনের মাঝে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে এই ঘটনা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে কারখানা সংশ্লিষ্ট সকলের ধুম্রজাল আচরণে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

বিপি/কেজে

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী