গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সাঁকোয়া ব্রীজ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণ ও বালাসী থেকে বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনার তলদেশে টানেল নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ও গণসমাবেশ করা হয়েছে। শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে ১১ দফা দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করে গাইবান্ধা নাগরিক মঞ্চ।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা নাগরিক মঞ্চের সদস্য সচিব ও জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাবু। বক্তব্য দেন, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মারুফ মনা ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জনি, গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক জাহাঙ্গীর কবির তনু, আদিবাসী-বাঙালী সংহতি পরিষদ সদর উপজেলা শাখার আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, মানবাধিকার কর্মী অঞ্জলী রানী দেবী, আইনজীবী ফারুক কবির ও সাঈদ আহমেদ আজাদ জয় এবং সাঁকোয়া সেতু বাস্তবায়ন মঞ্চের আহবায়ক কুশলাশীষ চক্রবর্তী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ দশমিক ৩০ একর জমি আছে। এই চিনিকলের জমি নেওয়া হয় সাঁওতাল ও বাঙালীদের কাছে থেকে। এই সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্মের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এখানে ইপিজেড নির্মাণ করা হলে সাঁওতালদের বাপ-দাদার জমি থাকবে না। সাঁওতালদের উচ্ছেদ করে ইপিজেড নির্মাণ যুক্তিযুক্ত নয়। তাই এখানে ইপিজেড নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিলের দাবিতে সাঁওতালরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। এই বাস্তবতায় গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের পলাশবাড়ী উপজেলার সাঁকোয়া ব্রীজ এলাকায় ইপিজেড চায় গাইবান্ধাবাসি।
বক্তারা আরও বলেন, গাইবান্ধার তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাজী আনোয়ারুল হক সাঁকোয়া ব্রীজ এলাকায় ইপিজেড করার প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ষড়যন্ত্রকারী মহল তৎকালীন জেলা প্রশাসকের প্রস্তাবনা ধামাচাপা দিয়ে সাঁওতালদের বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড করার পাঁয়তারা করছে। অথচ সাঁকোয়া এলাকায় ইপিজেড হলে বিনিয়োগকারিরা বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। কারণ এখানে ইপিজেড নির্মিত হলে রাজপথ, রেলপথ, নৌপথ, হেলিপ্যাড ব্যবহারের সুযোগ পাবেন বিনিয়োগকারীরা। এ ছাড়া সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা, সাদুল্লাপুর, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার মানুষসহ আশপাশের জেলার কর্মজীবী মানুষ ইপিজেডে সহজে যাতায়াত করতে পারবেন।
বক্তারা বলেন, গাইবান্ধার বালাসীঘাট থেকে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র-যমুনার তলদেশে টানেল নির্মাণ, গাইবান্ধায় গ্যাস সংযোগ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বগুড়া থেকে বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু পর্যন্ত নতুন রেললাইন স্থাপন, রামসাগর ট্রেন পুনরায় চালু, গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন, গাইবান্ধা মাতৃসদনে ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ, গাইবান্ধা সরকারি মহিলা কলেজ শহরের অভ্যন্তরে নির্মাণ এবং শহরের ফোরলেন কাজের নি¤œমানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির মাধ্যমে দুর্নীতি অনিয়ম প্রতিরোধের দাবি জানান বক্তারা। সেই সাথে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত ও ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধের দাবি জানানো হয় মানববন্ধন ও গণসমাবেশের এই কর্মসূচি থেকে।
বিপি/কেজে