১৪ অক্টোবর ২০২৫

আফগানিস্তানকে ২৬৩ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলো টাইগাররা

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
আফগানিস্তানকে ২৬৩ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলো টাইগাররা

খেলাধুলা ডেস্ক: চলতি বিশ্বকাপের ৩১তম ম্যাচে মুশফিক-সাকিবের অনবদ্য ফিফটিতে ভর করে আফগানদের বিপক্ষে ২৬২ রানের চ্যালেঞ্জ গড়েছে বাংলাদেশ। সেমির মিশনে টিকে থাকতে হলে আজ জিততেই হবে টাইগারদের। সে লক্ষ্যে অল্পতেই গুটিয়ে ফেলতে হবে প্রতিপক্ষকে।

সাউদাম্পটনের রোজ বোল। এমনিতেই বড় মাঠ, তার ওপর সকালে ঝরেছে বৃষ্টি। তাতে আউট ফিল্ড হয়ে গেছে চপচপে। ফলে বাউন্ডারি বের করাই হয়ে যাচ্ছে কষ্টসাধ্য। আর ছক্কা? সে তো সোনার হরিণ! আগের দিন ভারত-আফগান ম্যাচেও ছক্কার দেখা পাওয়া গেছিলো মাত্র একটি। সেখানে টাইগার ব্যাটসম্যানদেরও বাউন্ডারির দেখা পেতে রীতিমত যুদ্ধ করতে হচ্ছে।

আর সেই আরাধ্য ছক্কা হাঁকিয়েই আজ চলতি বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন মুশফিকুর রহিম। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটিও গড়েন মুশফিক। ছুটছিলেন টানা দ্বিতীয় শতকের লক্ষ্যে। কিন্তু ৪৯তম ওভারে আফগান পেসার দৌলত জাদরানের স্লোয়ারে ক্যাচ তুলে দেন এক্সট্রা কাভারে। অনেক ওপরে ওঠা বলটি তালুবন্দি করতে একটুও ভুল করেননি মোহাম্মদ নবী।

ফলে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন মুশফিক। আউট হওয়ার আগে ৮৭ বল থেকে চারটি চার ও একমাত্র বিশাল ছক্কায় খেলেন ৮৩ রানের ইনিংস। এছাড়াও মোসাদ্দেক হোসেন খেলেন ২৪ বলে চার বাউন্ডারিতে ৩৫ রানের এক ঝড়ো ইনিংস। ফলে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় সাত উইকেটে ২৬২ রান।

এর আগে ৪৩তম ওভারের শেষ বলে চালিয়ে খেলতে গিয়ে মিডউইকেটে গুলবাদিন নাঈবের তালুবন্দি হন রিয়াদ। মোহাম্মদ নবীর দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ৩৮ বলে দুই বাউন্ডারিতে ২৭ রান করেন। তার আউটে ক্রিজে আসেন সদ্য ইনিজুরি মুক্ত হয়ে দলে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন।

সোমবার নিজেদের সপ্তম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। টসে হেরে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। স্পিনবান্ধব আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ব্যাটিং পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন আনে টিম ম্যানেজমেন্ট। বাঁহাতি-ডানহাতি সুবিধা নেয়ার জন্য সৌম্যকে নিচে নামিয়ে দিয়ে লিটনকে ওপেনে নামিয়ে দেওয়া হয়। তবে এ ম্যাচে ওপেনে নেমে সফল হননি লিটন। ব্যর্থ হয়েছেন লিটনের জায়গায় খেলা সৌম্যও।

আগে ব্যটিংয়ে নেমে শুরুতেই আফগান স্পিনার মুজিবের মুখোমুখি হন দুই ওপেনার লিটন-তামিম। তাকে ভালোভাবেই সামলে দেখেশুনেই রান তুলতে থাকেন দুজন। তবে পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই লিটনকে শর্ট মিডঅফে ক্যাচ তুলে দিতে বাধ্য করেন স্পিনার মুজিবুর রহমান। হাশমত উল্লাহর ধরা সে ক্যাচটি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকলেও টিভি আম্পায়ার বার বার দেখে শেষ পর্যন্ত আউট দেন লিটনকে।

ফলে দলীয় ২৩ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে দুই বাউন্ডারিতে ১৬ রান করেন লিটন দাস। লিটনের আউটে ক্রিজে তামিমের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নাম্বার ওয়ান, সাকিব আল হাসান। এ দুজনের সতর্ক ব্যাটিংয়ে ১১.১ বলে দলীয় পঞ্চাশে পৌঁছে বাংলাদেশ। আফগান স্পিন সামলে এর কিছুক্ষণ পরেই নিজেদের জুটিতেও পঞ্চাশ ছাড়ান সাকিব-তামিম।

কিন্তু ১৭তম ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ নবীকে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফেরেন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। আউট হওয়ার আগে ৫৩ বল মোকাবেলায় চারটি বাউন্ডারিতে ৩০ রান করেন তামিম। এর পরের বলেই অর্থাৎ ১৮ ওভারের প্রথম বলে টাইগার শিবিরে আবারও আঘাত হানার চেষ্টা করেন রশিদ খান।

এবার রশিদের প্রতিপক্ষ ছিলেন সেরা ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান। তার বিপক্ষে লেগবিফোর দেন আম্পায়ার। কিন্তু রিভিউ নিয়ে এ যাত্রায় বেঁচে যান ২৭ রানে থাকা নাম্বার ওয়ান। পরে ৩৫ রান করে বিশ্বকাপে মোট ২৭ ম্যাচ খেলে ১০০০ রান পূর্ণ করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

আগের তিন বিশ্বকাপের ২১ ম্যাচে ৫৪০ রান করা সাকিব ২০১৯ বিশ্বকাপেই এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচে দুই সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিসহ করেছেন ৪৭৬ (৭৫, ৬৪, ১২১, ১২৪*, ৪১ ও আজ ৫১) রান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে না পারলেও আফগানদের বিপক্ষে ঠিকই ফিফটি তুলে নিয়েছেন এই বাঁহাতি। যদিও এরপরই মুজিবের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। আউট হওয়ার আগে ৬৯ বল খেলে মাত্র একটি বাউন্ডারিতে ৫১ রান করেন সাকিব।

সাকিবের আউটের মধ্যে দিয়ে ১৪৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর ক্রিজে এসে মুশফিকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ওপেনে লিটনকে জায়গা করে দেয়া বাঁহাতি সৌম্য সরকার। তবে ক্রিজে থিতু হওয়ার আগে তিনিও আলিম দারের আরেকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তের শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন মাত্র তিন রান করে। এবারো শিকারি সেই মুজিব। তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি, তিনটিই লেগবিফোর। ফলে ১৫১ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।

বিপি/কেজে

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন