
বিবাহ নিবন্ধন নিয়ে আলমাস ও রনি'র বৈপ্লবিক ভাবনা


আজিজুল হাকিম পাভেল, জাককানইবি থেকে : বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ আমাদের বড় ধরনের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক সমস্যা।রাষ্ট্রের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়তই প্রকাশ্যে বা গোপনে মিথ্যে তথ্যের মাধ্যমে শত-শত বহুবিবাহ বা বাল্যবিবাহ সংগঠিত হচ্ছে।তার ফলে সামাজিক অবক্ষয়ের পাশাপাশি সমাজ ও সভ্যতা নানাবিধ অপরাধে নিমজ্জিত হচ্ছে।
এই ধরুন,এক ব্যক্তি কোন এলাকায় বিয়ে করে সময়ের ব্যবধানে অন্য কোন এলাকায় তথ্য গোপন রেখে দ্বিতীয় বা পর্যায়ক্রমে ততোধিক বিয়ে করে ফেলতে পারেন।দুই-তিন জন সাক্ষী আর বর-কনের সম্মতিক্রমে কাজী সাহেব খুব সহজেই বিবাহের কাজ সম্পন্ন করে ফেলেন।বর বা কনের পূর্বের বৈবাহিক অবস্থা জানা সম্ভব হয় না।তার ফলে একজন পুরুষ বা নারী তথ্য গোপন করে একের অধিক বিয়ে করতে পারেন যার শিকার আমাদের সমাজের অনেকেই।এই প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশী ভুক্তভোগী আমাদের দেশের নারীরা।
শহরে কাজের সন্ধানে আসা কর্মজীবী মেয়েরা অন্য কোন এলাকার ছেলের প্রকৃত পরিচয় বা পরিবারের বিষয়ে তাৎক্ষণিক খোঁজখবর না নিয়ে কাজীর মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়,উক্ত ছেলেটি পূর্বেই বিবাহিত ছিল।তার স্ত্রী-সন্তান ছিল।এভাবে প্রতারণার ফাঁকে অনেক মেয়ের জীবন ধ্বংস হয়ে যায়।বিপরীতক্রমে শহরাঞ্চলের অনেক সংবাদ থেকে জানা যায়,কোন সংঘবদ্ধ গ্রুপ ভূয়া বাবা-মা,কাজী,উকিলবাবা সেজে কোন সুন্দরী মেয়েকে কনে বানিয়ে বেশী টাকা দেনমোহরের মাধ্যমে কোন ধনবান ব্যক্তির সাথে বিয়ে দিয়ে কয়েকদিনের ব্যবধানে ডিভোর্সের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা আদায় করে।এই বিয়ে বিয়ে খেলায় প্রতারকচক্র সবসময়ই সরব।
এছাড়াও বয়স বাড়িয়ে ভূয়া জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে বাল্যবিবাহের সংস্কৃতি আমাদের সমাজে সর্বাত্মক। উপরোক্ত বিষয়াদির সমাধানকল্পে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের "ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং" বিভাগের দুইজন শিক্ষার্থী মোঃ আলমাস হোসাইন শাজা ও মোঃ ইউসুফ জামিল রনি প্রজেক্টের অংশ হিসেবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সম্পর্কিত একটি ডিভাইস তৈরি করেন। যার নাম দিয়েছেন "Biometric Registration System for Preventing Illegal Marriage"।
যার মাধ্যমে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানের ভিত্তিতে বিয়ে নিবন্ধন,বর-কনের পূর্বোক্ত বৈবাহিক অবস্থা ও সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি সহজেই জানা যাবে।পাশাপাশি জন্মনিবন্ধন অনুযায়ী বর-কনের প্রকৃত বয়স ক্যালকুলেশন করা যাবে।ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছর এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নিচে কেউ ইচ্ছে করলেও এই ডিভাইসের মাধ্যমে বিয়ে করতে পারবে না।সাক্ষীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের তথ্য ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ডাটাবেজ সিস্টেমে সংরক্ষিত থাকবে।কাজীর অবর্তমানেও যেকোন সময় সকল তথ্যাদি জানা যাবে।তার ফলে তথ্য গোপন করে বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহের বিষয়টি থাকবে না।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মোঃ আলমাস হোসাইন শাজা বলেন,আমরা আমাদের শিক্ষার অংশ হিসেবে উপরোক্ত বিষয়টা সিলেক্ট করি।যার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আমাদের বিভাগের সম্মানিত সহকারী অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মাঈন উদ্দিন স্যার।আমরা চাই,বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ নামক অভিশাপ থেকে আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্র মুক্তি পাক।
বিপি/আর এল
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন





