
কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাবে অ্যাসপিরিন, যা বলছে গবেষণা


বাংলাপ্রেস ডেস্ক: আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি জানিয়েছে, কোলোরেক্টাল ক্যান্সার (বৃক্কান্ত্র ক্যান্সার) পুরুষদের মধ্যে ক্যান্সারের কারণে মৃত্যুর তৃতীয় এবং নারীদের মধ্যে চতুর্থ প্রধান কারণ। তবে, পুরুষ ও নারীদের সংখ্যার হিসাব মিলিয়ে দেখা গেলে এটি ক্যান্সারের কারণে মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হিসেবে উঠে আসে। মোটামুটি এক জনের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ এবং ২৬ জন নারীর কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ভালো খবর হলো- এই ক্যান্সার আক্রান্ত হবার পরও পাঁচ বছর বাঁচার হার প্রায় ৮০%। নতুন গবেষণায় আরও আশাব্যঞ্জক তথ্য পাওয়া গেছে। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত ২০২৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন অ্যাসপিরিন খেলে ক্যান্সার পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি ৫৫% কমে যায়। যারা প্রতিদিন অ্যাসপিরিন নিয়েছেন, তাদের ক্যান্সার ফেরার সম্ভাবনা মাত্র ৭.৭% ছিল। অন্যদিকে, প্লেসবো গ্রুপে এই ঝুঁকি ছিল ১৪.৮% থেকে ১৬.৮% পর্যন্ত।
সিটি অব হোপ জানিয়েছে, অ্যাসপিরিন কার্যকর হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ (ইনফ্লামেশন) কমানোর মাধ্যমে। দীর্ঘ সময় ধরে প্রদাহ চললে কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তবে সব মানুষই যাদের প্রদাহ থাকে তারা ক্যান্সারে আক্রান্ত হন না, তবে ঝুঁকি কিছুটা বাড়ে।
২০১২ সালের আরেকটি গবেষণা দেখিয়েছে, যারা PIK3CA জিনে মিউটেশন থাকা সত্ত্বেও ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর নিয়মিত অ্যাসপিরিন ব্যবহার করেছেন, তাদের পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি কম এবং সার্বিক বাঁচার হার বেশি। এই জিন কোষ বৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণ করে। মিউটেশনের কারণে কোষ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে, যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এই ধরনের মিউটেশন প্রায় ১০%-২০% কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে পাওয়া যায়। অ্যাসপিরিনের আরও কিছু উপকারিতা রয়েছে। মায়ো ক্লিনিক জানায়, এটি রক্ত পাতলা করে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। সাধারণত ৭৫ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম দৈনিক খাওয়া অ্যাসপিরিন এই কাজে কার্যকর হতে পারে। তবে, প্রতিদিন অ্যাসপিরিন নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক কম মাত্রার অ্যাসপিরিন মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে, যেমন ডিমেনশিয়া বা হালকা মানসিক ক্ষয় (মাইল্ড কগনিটিভ ইম্পেয়ারমেন্ট) কমাতে। তবে, র্যান্ডমাইজড ট্রায়ালে এই প্রভাব এখনও নিশ্চিত হয়নি, তাই আরও গবেষণার প্রয়োজন।
বিপি>টিডি
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন





