১৩ অক্টোবর ২০২৫

পিঠের ব্যথা কমাতে কার্যকর হতে পারে ভিটামিন ডি

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১৪ পিএম
পিঠের ব্যথা কমাতে কার্যকর হতে পারে ভিটামিন ডি

বাংলাপ্রেস ডেস্ক:   অনেকেরই মাঝে মাঝে পিঠে ব্যথা হয়ে থাকে, যা অস্বাভাবিক নয়। তবে যদি নানা চেষ্টা-চিকিৎসার পরও ব্যথা না কমে, তাহলে তার একটি কারণ হতে পারে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি। যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব দেখা যায়— এমন তথ্য দিয়েছে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক।

 

শরীরের হাড়কে শক্ত রাখতে ক্যালসিয়াম-এর সঙ্গে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া এটি পেশি ও হাড়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমেও সহায়তা করে। শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না থাকলে হাড় ও পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে দৈনন্দিন কাজের পরও ব্যথা বা অস্বস্তি থেকে যেতে পারে।

অনেক সময় ভিটামিন ডি ঘাটতির নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে দীর্ঘদিনের পিঠব্যথা তার ইঙ্গিত হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করলে পিঠের ব্যথা কিছুটা কমে আসতে পারে।

২০১৯ সালে দ্য পারমানেন্ট জার্নাল-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, যেসব অংশগ্রহণকারী ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন মুখে ৫০ হাজার আন্তর্জাতিক একক (আইইউ) ভিটামিন ডি গ্রহণ করেছিলেন, তাদের ঘাড় ও পিঠের ব্যথা গড়ে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছিল।  

একই বছর মলিকিউলার বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত আরেক গবেষণায় দেখা যায়, অতিরিক্ত ওজনের কিছু ব্যক্তিকে শুরুতে ১ লাখ আন্তর্জাতিক একক (আইইউ) ভিটামিন ডি এবং পরে প্রতিদিন ৪ হাজার আন্তর্জাতিক একক (আইইউ) করে ১৬ সপ্তাহ খাওয়ানো হয়। যাদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি ছিল, তারা ব্যথা থেকে কিছুটা উপশম পান; কিন্তু যাদের ঘাটতি ছিল না, তাদের ক্ষেত্রে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি।

তবে এসব গবেষণায় ব্যবহৃত ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ সাধারণ প্রস্তাবিত মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক ১৫ থেকে ২০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি প্রয়োজন, যা দুধ, সিরিয়াল বা ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার থেকে পাওয়া যায়।

যাদের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি নেই— যেমন যারা নিরামিষভোজী বা পাচনতন্ত্রের সমস্যা (যেমন ক্রোনস ডিজিজ) আছে— তারা সূর্যের আলোয় কিছু সময় থাকলে কিংবা ওষুধের দোকানে পাওয়া ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণ করতে পারেন।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্তে ২৫-হাইড্রক্সি ভিটামিন ডি এর মাত্রা ৩০ ন্যানোমোল প্রতি লিটার (এনমল/এল)-এর নিচে নেমে গেলে উচ্চমাত্রার ভিটামিন ডি গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। আদর্শভাবে এই মাত্রা ৫০ ন্যানোমোল প্রতি লিটার (এনমল/এল)-এর ওপরে থাকা উচিত।

তবে সব গবেষণাই ভিটামিন ডি ও পিঠব্যথা উপশমের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক খুঁজে পায়নি। ২০২৪ সালে ইন ভিভো জার্নালে প্রকাশিত এক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে ১০টি র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়াল (নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষামূলক গবেষণা) বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভিটামিন ডি ও নিচের পিঠের ব্যথা কমার মধ্যে তেমন শক্তিশালী যোগসূত্র পাওয়া যায়নি। তবু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি একটি সহায়ক চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে কার্যকর হতে পারে।

শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি বজায় রাখা হাড় ও পেশির সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। আর যদি দীর্ঘদিন ধরে পিঠে ব্যথা থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্তে ভিটামিন ডি পরীক্ষা করিয়ে দেখা যেতে পারে— ঘাটতি পূরণ করলে হয়তো মিলবে স্বস্তি।


বিপি>টিডি

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন