১৪ অক্টোবর ২০২৫

দর্শকদের মুগ্ধ করে আনন্দ পান মুনছুর

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
দর্শকদের মুগ্ধ করে আনন্দ পান মুনছুর

রাব্বী আহমেদ,মেহেরপুর থেকে: নেই প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা, সঙ্গীত বিষয়ে পড়াশোনা তো দূরের কথা কোনো ওস্তাদের কাছে যাওয়ারও সুযোগ হয়নি। মঞ্চের গান কিংবা পথে প্রান্তরে শোনা গান থেকেই রপ্ত করেছেন অসংখ্য গান।

বিচ্ছেদ, আধুনিক, ছায়াছবির গান ও কৌতুক বলতে পারেন মূল শিল্পীর সুরেই। চেয়ার-বেঞ্চে টোকা দিয়ে ডুগি তবলার মতোই বাজনা বাজান। এ যেন একাধারে শিল্পী, সুরকার ও গানের যন্ত্রশিল্পী। পথেঘাটে আপন মনেই গাইতে থাকেন গান। তাইতো পথের বাউল হিসেবেই এলাকায় পরিচিত। দর্শকরাও মুগ্ধ হয়ে শোনে সুরেলা কণ্ঠের মন মাতানো গান।

বলছিলাম মুনছুর আলীর কথা। তিনি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় একজন ভ্যান চালক।

গাংনী প্রেসক্লাবের পাশে এক চায়ের দোকানে কথা হয় মুনছুর আলীর সঙ্গে। গান গাওয়ার সময় আশপাশের দর্শকরাও যোগ দিলেন সেখানে। কাঠ ও অন্যান্য উপকরণ নিয়ে দর্শকরাও বাজনা বাজালেন। গানের সুরে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বাজানোর মতোই ভঙ্গিমায় তাল দিলেন কয়েকজন দর্শক। দেখলে মনে হয় সাজানো কোনো গানের মঞ্চ। গানের মুগ্ধতা ছড়িয়ে দর্শকদের আটকে দিলেন প্রায় একঘণ্টা। একের পর এক গান পরিবেশনে আকৃষ্ট দর্শকদের ক্লান্তি নেই। এভাবেই দিনের বেশি সময় কেটে যায় বলে জানালেন মুনছুর আলী।

আলাপচারিতায় মুনছুর একেবারেই আঞ্চলিক ভাষায় রসিকতার ছলে বললেন, ‘আমি মানসের (মানুষের কাছে) ছোট-বড় মঞ্চে গাওয়া গান শুনে তা শিখিছি। আমার প্রথম জীবনে এরশাদের আমল থেকে খাটতি, খাটতি, মোটর গাড়ির হেলপারি কত্তি, কত্তি পথ চলেছি। এখন আমি পাখিভ্যান (ব্যাটারি চালিত ভ্যান) চালিয়ে পাখির মতো উড়ে বেড়াই। যার সঙ্গে দেখা হয়, তার সঙ্গে কথা না বললি প্যাটের ভাত জিন্ন (হজম) হয় না। জনুগণের খুশি মানে আমার খুশি। শিল্পী হতি চাইনি। গান গেয়ে মানুষকে আনন্দ দিতি চাই।’

মুনছুর আলীর গানের দর্শক মেহেরপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লাইন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, ‘গাংনী শহরের বিভিন্ন স্থানে মাঝে মাঝেই মুনছুর আলীকে গান গাইতে দেখা যায়। গান গাইতে পারলে সে খুশি হয়। আমরা প্রায়ই তার গান শুনি। বেশ ভালো লাগে। তবে এর বিনিময়ে টাকা দিতে গেলেও নেয় না।’

গাংনী প্রেসক্লাব সভাপতি রমজান আলী জানান, মেহেরপুর জেলায় এমন অনেক পথের শিল্পী রয়েছেন, যাদের শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি না থাকলেও তারা সাধারণ মানুষের কাছে শিল্পী হিসেবেই পরিচিত।

পথের বাউল মুনছুর আলী বলেন, ‘যতদিন বেঁচে থাকব, মানুষকে গান শুনিয়ে আনন্দ দিয়ে যাব।

বিপি/কেজে

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন