
লালমনি-এক্সপ্রেস ট্রেনটি ইঞ্জিন সংকটে



মামুনুর রশিদ (মিঠু) লালমনিরহাট থেকে : রেলপথে সরাসরি ঢাকা যাওয়ার একমাত্র যানবাহন হলো লালমনি-এক্সপ্রেস ট্রেন। লালমনিরহাট থেকে ৪শত ৪৬ কিলোমিটার দুরত্বের ঢাকার কমলাপুরের উদ্যেশ্যে ট্রেনটি সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে লালমনিরহাট থেকে যাত্রী নিয়ে ১৮টি ষ্টেশনে যাত্রা বিরতি দিয়ে রাত ৯টা ১০মিনিটে ঢাকার কমলাপুর ষ্টেশনে পৌঁছার কথা থাকলেও ট্রেনটির ইঞ্জিন সংকটের কারণে সঠিক সময়ে ছাড়তে ও পৌঁছাতে পারছে না। ফলে ঢাকাগামী যাত্রীরা পড়েছে বিপাকে। এ দিকে যাত্রী বহনের জন্য ১৪ কামরা বিশিষ্ট দুটি ট্রেন থাকলেও ইঞ্জিন রয়েছে একটি। ফলে টিকেট কেটে ষ্টেশনে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা যাত্রীরা বসে থাকে। অপেক্ষায় থাকে কখন ঢাকা থেকে অপর ট্রেনটি ফেরত আসবে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করায় ভোগান্তিতে পড়েছে সব বয়সের যাত্রীরা। তাছাড়া লালমনি-এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রাকালে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাক্তিরা বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে যাত্রীদের কাছথেকে। লালমনিরহাট থেকে ঢাকা যাওয়ার দিনের বেলায় কোন বাস না থাকায় ঢাকাগামী যাত্রীগন রয়েছে চরম বিপাকে। জরুরী প্রয়োজনে ঢাকা যাওয়া দু:সাধ্য হয়ে ওঠেছে। দিনের বেলা লালমনির- এক্সপ্রেস ট্রেনটি থাকলেও সেটি সঠিক সময়ে ছাড়তে ও গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেনা।
দেখা গেছে ইঞ্জিন সংকটের কারণে ট্রেনটি গভীর রাতে কমলাপুরে পৌঁছে। এতে অনেক যাত্রীই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। নিরাপদ ভ্রমণের জন্য যাত্রীরা প্রথমে রেলকেই বেঁছে নেয়। অথচ সেই ট্রেনেরই বেহাল দশা। তার ওপর লালমনি-এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাক্তিরা বিভিন্ন অজুহাতে যাত্রী নিয়ে যাওয়া আসা করান। বিনিময় তাদের নিকট থেকে পান পুরো ভাড়ার কিছু কম টাকা। এভাবে ট্রেনটির খাবার বগি থেকে শুরু করে ইঞ্জিন, ট্রেন পরিচালকের রুমে বদল করে যাত্রীদের বহন করা হচ্ছে। ফলে এর সাথে জড়িত দায়িত্বপ্রাপ্ত জিআরপি পুলিশ, আরএমবি, টিটিরা এসব অনিয়ম দুর্নীতিতে মেতে উঠেছে।
নিয়মিত ট্রেন যাত্রী মনিরুজ্জামান মনির, হেলেনা আক্তার, আফজাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টায় ট্রেন ছাড়ার কথা কিন্তু প্রতিদিন ট্রেনটি ছাড়তে দুপুর ১/২ টা বাজে। একদিকে আমাদের ভোগান্তি অপরদিকে ঢাকা পৌঁছে অনেক রাতে ফলে যাত্রীদের বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অথচ আর একটি মাত্র ইঞ্জিন দিলে এ সংকট থাকে না। ট্রেন যাত্রী শায়লা পারভীন জানান, আরামদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণের জন্য ট্রেনে ঢাকা যাতায়াত করে থাকি। কিন্তু বর্তমানে ট্রেনটি একেতো বিলম্বে ছাড়ে অপরদিকে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষমান কক্ষ বা ট্রেনের কামরা কোনটিই ভালো নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দীর্ঘসময় যাত্রা করতে হয়। এতে করে শিশু ও বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট রেলওয়ে ষ্টেশন মাস্টার নিজাম উদ্দিন বলেন, লালমনি-এক্সপ্রেস ট্রেনটির একটি ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ার ফলে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। নতুন ইঞ্জিন না আসা পর্যন্ত এ সমস্যা দূর হবে না। এ ব্যাপারে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, রেলের ইঞ্জিনগুলো অনেক পুরনো হওয়ায় প্রায় নষ্ট হয়ে থাকে। এ জন্য ট্রেনের সিডিউল বির্পযয় ঘটছে। নতুন ইঞ্জিনের জন্য চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে। অবিলম্বে তা পাওয়া যাবে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার যাত্রীদের রেল সেবা নিশ্চিত করতে ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করেছে, আর এটা রেল মন্ত্রীর চলতি মাসের তৎপরতাতেই দৃশ্যমান। তবে রেল মন্ত্রীর লালমনিরহাট সফরকে ঘিরে আসায় বুক বেঁধেছেন লালমনিরহাটের রেল যাত্রী সাধারণ। বাংলাদেশ রেলওয়ে খুব দ্রুত সেবার মান নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে এমনটি আসা করছে সাধারণ যাত্রীরা।
উল্লেখ্য শুক্রবার (২২মার্চ) ২দিনের সফরে লালমনিরহাট আসেন রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
বিপি/আর এল
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন





