১৫ অক্টোবর ২০২৫

নারী ফুটবলার সুমাইয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
নারী ফুটবলার সুমাইয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি
বাংলাপ্রেস ডেস্ক: ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কয়েকজন সিনিয়র সদস্যের সঙ্গে। যে কারণে, তারাসহ পুরো নারী ফুটবল দল অনেকটা বিদ্রোহ করে বসে আছে। নারী ফুটবলারদের কথা, পিটার বাটলার কোচ থাকলে তারা ক্যাম্পে যোগ দেবে না। নারী ফুটবলার এবং কোচের মধ্যকার এই দ্বন্দ্ব এখন বাংলাদেশ ফুটবলে আলোচিত ঘটনা। বাফুফে এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে তারা। এরই মধ্যে নারী ফুটবলারদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। চলছে পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য। এরই মধ্যে নারী ফুটবলাররাও নাকি নানা অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখিন হচ্ছেন। জাপান প্রবাসী জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য মাতসুশিমা সুমাইয়া নাকি এরই মধ্যে বেশ কিছু হত্যা এবং ধর্ষণের হুমকি পেয়েছেন। আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে ফেসবুকে নিজের ভ্যারিফায়েড পেজে দেয়া এক পোস্টে সুমাইয়া নিজেই এ অভিযোগ তুলে ধরেন। সে সঙ্গে আক্ষেপ প্রকাশ করেন, কেন তিনি একজন ফুটবলার হতে গেলেন? কারণ, একজন ক্রীড়াবীদ হিসেবে যেভাবে দেশকে পাশে পাওয়ার কথা ছিল, সেভাবে পাচ্ছেন না। ফেসবুকে ইংরেজি ভাষায় সুমাইয়ার দেওয়া স্ট্যাটাসটা বাংলা অনুবাদ করে দেয়া হলো পাঠকদের জন্য। সুমাই লিখেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম মাতসুশিমা সুমাইয়া। আমি বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। ইন্টার স্কুলে ইংলিশ মিডিয়াম স্টুডেন্ট হয়ে খেলা থেকে শুরু করে মালদ্বীপে লিগ জয় এবং বাংলাদেশের হয়ে ২০২৪ সালে সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ জত- এ যাত্রা আমার কাছে ছিল মিষ্টি-তিক্ততায় ভরা। যখন থেকে আমি এই পথ (নারী ফুটবলার হিসেবে খেলা) বেছে নিয়েছি, তখন থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল সেসব তরুণ শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবো, যাদের বাবা-মা চায় তারা শুধু পড়ালেখার উপরই মনোযোগ নিবদ্ধ করে থাকুক। আমি দেখাতে চেয়েছিলাম যে আবেগ এবং নিষ্ঠা সব বাধা ভেঙে দিতে পারে। কিন্তু আজ, আমি আফসোস নিয়ে বসে আছি। আক্ষেপ হচ্ছে আমার শিক্ষা, আমার পরিবার, ঈদ, সব বিসর্জন দিয়ে এমন একটি দেশের সেবা করার জন্য যে আমাদের সংগ্রামের প্রশংসা করতে জানে না। আমি আমার বাবা-মায়ের সাথে ফুটবল খেলার জন্য লড়াই করেছি- এই বিশ্বাসে যে আমার দেশ আমার পাশে থাকবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ভিন্ন। একজন ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা সত্যিই কেউ চিন্তা করে না। আমার এবং আমার সতীর্থদের জন্য আমরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি সে সম্পর্কে ইংরেজিতে একটি চিঠি লেখার ন্যূনতম ক্ষমতা আমার আছে। গত কয়েকদিন ধরে, আমি অসংখ্য হত্যা এবং ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি। আর এমন সব কথা যা আমাকে এমনভাবে ভেঙে দিয়েছে যা আমি কখনও স্বপ্নেও কল্পনা করিনি। আমি জানি না এই (ট্রমা) আঘাত থেকে সেরে উঠতে আমার কতক্ষণ লাগবে। তবে আমি জানি এবং চাই যে- কাউকে শুধুমাত্র তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কখনো যেতে হবে না।’ হঠাৎ করে ফেসবুকে সুমাইয়ার দেয়া এই স্ট্যাটাস নিয়ে এরই মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে ফুটবলাঙ্গনে। মেয়েদের সাথে আসলে কী হচ্ছে, তা জানতে চান অনেকে। আবার সুমাইয়ার এই স্ট্যাটাস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নারী ফুটবলাররা থাকেন বাফুফে ভবনের চারতলায়। দ্বিতীয় তলায় চলে বাফুফের প্রশাসনিক কার্যক্রম। সুমাইয়া হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি পেয়ে থাকলে তা বাফুফেকে না জানিয়ে, আইনের আশ্রয় না নিয়ে কেন ফেসবুকে লিখতে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সুমাইয়ার হঠাৎ দেয়া এই ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিষয়টা আমাদের নজরে এসেছে। ফেসবুকে আমিও তার স্ট্যাটাসটা পড়েছি। এরপর আমি নিজেই তাকে ফোন করেছি। জানতে চেয়েছি আসলে কী সমস্যা হয়েছে। জবাবে সুমাইয়া খুব বেশি কিছু বলতে চায়নি। শুধু এটুকু জানিয়েছে, আরও কিছু জানতে পারলে পরে বিস্তারিত সে আমাদের জানাবে।’ বিপি/টিআই
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন