১৪ অক্টোবর ২০২৫

পর্যটন শিল্প উন্নয়নে অগ্রগতি নেই সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
পর্যটন শিল্প উন্নয়নে অগ্রগতি নেই সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত

মামুনুর রশিদ মিঠু, লালমনিরহাট থেকে : উত্তরাঞ্চলে পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের অভাবে পর্যটন কেন্দ্র শিল্পে রূপান্তর করা যাচ্ছে না। ফলে সরকার প্রতি বছর কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পর্যটন শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা সত্ত্বেও উত্তর জনপদ আজও অবহেলিত।

পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত পর্যটনকে শিল্পে রূপান্তরিত করে উত্তরাঞ্চলে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য প্রত্ন সম্পদ এবং পুরোকীর্তিগুলো প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব হলেও তা করা হচ্ছে না। পাশাপাশি বছরের পর বছর এ অঞ্চলের প্রত্ন সম্পদ ও পুরোকীর্তিগুলোর পতিত অবস্থায় বিনষ্ট হচ্ছে। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষ ক্রমেই পর্যটনের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। দেশি-বিদেশী অনেক পর্যটকই দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যাতায়াত করে জ্ঞান আহরণ করেন। কিন্তু সেতুলনায় পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নাই।

পর্যটন ক্ষেত্রে নেপাল, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের পরই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশের স্থান হওয়া সত্ত্বেও ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছর পরেও পর্যটন ক্ষেত্রে উত্তরাঞ্চল উপেক্ষিত হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে সুপ্রাচীন সভ্যতার স্মৃতি বিজড়ির বরেন্দ্রভূমি, মহাস্থানগড়, পাহাড়পুর, জয়সাগর প্রভৃতি পুরাকীর্তিগুলোকে আকর্ষণীয় করে তোলার ক্ষেত্রে পর্যটন কর্পোরেশনের তেমন কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয় নাই। উত্তর জনপদের তেঁতুলিয়ার সুপ্রাচীন হরিণ রেখায় দাঁড়িয়ে হিমালয়ে শৃঙ্খলাদি অবলোকন, মোহময়ী রামসাগর স্নিগ্ধ প্রকৃতির আমেজ উপভোগ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য়ের নীলভূমি পাকশী, নিমগাছির সুবিশাল জায়গায় প্রভাবদীঘি, ঘীপতিয়ার ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ী স্থাপত্য কলার মনোমুগ্ধ কারুকার্য অবলোকন, শাহাজাদপুরে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজাড়িত কুঠিবাড়ী, সুবিশাল পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহারে অপর পুলক অনুভব, শেরপুর বাজার দীঘী ও ঘেটুয়া মসজিদের প্রাচীনতম অনুসন্ধান প্রতীকি ভ্রমণ বিলাসী মানুষের কাম্য হওয়া সত্ত্বেও এসব পুরাকীর্তির কেন্দ্রগুলোকে আকর্ষণীয় করে তোলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়।

দিনাজপুরের চেহেল গাজীর মাজার, মহাস্থানের বেহুলার বাসর ঘর, নওগার দেবেনহাটির রাজবাড়ী, সাপাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী দিবড় দীঘি, আকর্ষণীয় ভবানীপুর মন্দির, নাটোর রাজবাড়ী ও লালমনিরহাট বুড়িমারী স্থলবন্দর, সদর উপজেলার বিশাল ঐতিহ্যবাহী ৬০ একর জমির উপর স্থাপিত শুকান দীঘি (হুসেইন সরবর), ঐতিহ্যবাড়ী তিস্তা ব্যারেজ, তিস্তা সড়ক সেতুর উত্তর প্রান্তে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা যেতে পারে বলে ভ্রমণপ্রীয়াসু মহল মনে করছেন। পর্যটন কর্পোরেশন দেশের অন্যান্য স্থানে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করলেও উত্তরাঞ্চলের কোন বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ আদৌ করা হয়নি। বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সরকার প্রতিবছর প্রায় ১০০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে বিদেশি পর্যটকদের উত্তরাঞ্চলের অনেক কিছুর সম্পর্কেই অজানা থেকে যাচ্ছে।

বিপি/আর এল

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন