
ক্রীড়া প্রতিবেদক: লর্ডসে পাকিস্তানের দেওয়া ৩১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। স্কোর ৪২ ওভারে ৮ উইকেটে ২০৬ রান। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের পর ফিরে গেলেন মাহমুদউল্লাহও। শাহীন আফ্রিদি এক ওভারে দুই উইকেট তুলে নেওয়ায় বিপদে বাংলাদেশ। এর আগের ওভারেই আবার আউট হয়ে গেছেন মোসাদ্দেক হোসেন।
ভারতের বিপক্ষে দারুণ ব্যাটিংয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছিলেন সাইফউদ্দিন। হারলেও তিনি অপরাজিত ছিলেন হাফসেঞ্চুরি করে। কিন্তু পাকিস্তানে বিপক্ষে রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। তাকে আউট করার এক বল পরই শাহীন তুলে নিয়েছেন ২৯ রান করা মাহমুদউল্লাহকে। যাতে ৫ উইকেট পূরণ করেছেন বাঁহাতি এই পেসার।
বিশ্বকাপ খুব একটা ভালো কাটলো না মোসাদ্দেক হোসেনের। ব্যাট হাতে বলার মতো কোনও পারফরম্যান্স নেই তার। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেও ব্যর্থ এই ব্যাটসম্যান। শাদাব খানের বলে আউট হয়েছেন তিনি ১৬ রানে।
সাকিব আউট
দারুণ ব্যাটিংয়ে আরেকবার ক্রিকেট বিশ্বকে মুগ্ধ করলেন সাকিব আল হাসান। পেলেন এবারের বিশ্বকাপের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরির দেখা। প্রত্যাশা ছিল সেঞ্চুরিরও। কিন্তু পারলেন না তিনি। ৬৪ রান করে আউট হয়ে গেছেন সাকিব।
শাহীন আফ্রিদির আঘাতে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। লিটন দাসের পর সাকিবও তার শিকার। এই পেসারের বল তার ব্যাটে কানায় লেগে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক সরফরাজ আহমেদের গ্লাভসে। আউট হওয়ার আগে ৭৭ বলের ইনিংসটি সাকিব সাজান ৬ বাউন্ডারিতে।
এবারের আসরে টানা সপ্তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সাকিব। যাতে ৬০৬ রান করে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করার আগে আবারও বসেছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার শীর্ষে।
ইনিংস লম্বা হলো না লিটনের
শুরুটা বেশ ভালো হয়েছিল লিটন দাসের। বড় ইনিংসের আভাস ছিল তাতে। কিন্তু হলো না, শাহীন আফ্রিদির স্লোয়ারে ৪০ বলে ৩২ রান করে ফিরেছেন তিনি।
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন লিটন। ঠাণ্ডা মাথায় নিজের সঙ্গে দলের রান বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু শাহীনের স্লোয়ার বুঝতে না পেরে কভারে সহজ ক্যাচ দেন হারিস সোহেলের হাতে। যাতে চতুর্থ উইকেটে ভাঙে সাকিবের সঙ্গে তার গড়া ৫৮ রানের জুটি।
সাকিবের আরেকটি হাফসেঞ্চুরি
ছুটছেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপে ব্যাটে বসন্ত চলা এই ব্যাটসম্যান পূরণ করলেন আরেকটি হাফসেঞ্চুরি। এবারের আসরে এটি তার পঞ্চম ফিফটি।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের বিশ্বকাপ দুহাত ভরে দিচ্ছে সাকিবকে। মাঠে নামলেই অন্তত হাফসেঞ্চুরি পাচ্ছেন। ব্যতিক্রম হলো না পাকিস্তানের বিপক্ষেও। শাদাব খানের বলে ১ রান নিয়ে পূরণ করেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৭তম হাফসেঞ্চুরি। ভারতের বিপক্ষে আগের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে খেলেছিলেন ৬৬ রানের ইনিংস।
মুশফিকও বোল্ড
বোল্ড হয়ে গেলেন মুশফিকুর রহিমও। তামিম ইকবালের পর এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানও একইভাবে আউট হয়ে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে।
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মিলে দলীয় স্কোর বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন মুশফিক। সাবলীল ব্যাটিংয়ে শুরুটা দারুণ হলেও বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। ওয়াহাব রিয়াজের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন ১৬ রানে। এই পেসারের বল তার ব্যাটে লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। তার ১৯ বলের ইনিংসে ছিল ২ চারের মার।
আবারও বোল্ড তামিম
ভারতের বিপক্ষে আগের ম্যাচে বোল্ড হয়ে ফিরেছিলেন তামিম ইকবাল। পাকিস্তান ম্যাচেও একই পরিণতি। শাহীন আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে গেছেন বাঁহাতি ওপেনার।
ভারতের বিপক্ষে মোহাম্মদ সামির বল তার ব্যাটে লেগে আঘাত করেছিল স্টাম্পে। এবার শাহীনের স্লোয়ারে কুপোকাত তামিম। বল তার ব্যাট ও পায়ের মাঝখান দিয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। বোল্ড হওয়ার আগে ২১ বলে করেন তিনি মাত্র ৮ রান।
সেই আমিরের বলেই সৌম্য আউট
শুরুতেই সৌম্য সরকার ‘জীবন’ পেয়েছিলেন হারিস সোহেলের সৌজন্যে। মোহাম্মদ আমিরের বল তার ব্যাট ছুঁয়ে গেলে স্লিপে দাঁড়ানো হারিস তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন। যদিও সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি বাংলাদেশি ওপেনার। সেই আমিরের শিকার হয়েই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি।
৬ রানে ‘জীবন’ পাওয়া সৌম্য আউট হয়েছেন ২২ রানে। আমিরের বলে পয়েন্টে ধরা পড়েন তিনি ফখর জামানের হাতে।
বাংলাদেশের লক্ষ্য ৩১৬
সেমিফাইনাল স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে আগেই। শেষটা তাই জয় দিয়ে রাঙিয়ে দেশে ফেরার লক্ষ্য বাংলাদেশের। সেই লক্ষ্যে কঠিন পথ পেরোতে হবে টাইগারদের। শুক্রবার লর্ডসে পাকিস্তান নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে করেছে ৩১৫ রান।
টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট তুলে নিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। ভারত ম্যাচের পর পাকিস্তানের বিপক্ষেও ৫ উইকেট এই পেসারের। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১০০ উইকেটও পূরণ করেছেন মোস্তাফিজ। হারিস সোহেলকে ফিরিয়ে স্পর্শ করেন এই মাইলফলক। ৫৩ ইনিংসে তার উইকেট সংখ্যা এখন ১০৩। আর চলতি বিশ্বকাপে ২০ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন তিনি। ২৪ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে মিচেল স্টার্ক।
সেঞ্চুরি করে পাকিস্তানকে বড় ইনিংসের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন ইমাম-উল-হক। ১০০ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে দিয়েই শুরু মোস্তাফিজের উইকেট উৎসব। এরপর ফিরিয়েছেন তিনি হারিস সোহেল (৬), শাদাব খান (১), ইমাদ ওয়াসিম (৪৩) ও মোহাম্মদ আমিরকে (৮)। ১০ ওভারে ৫ উইকেট নিতে মোস্তাফিজ খরচ করেছেন ৭৫ রান। দ্বিতীয় সেরা বোলার সাইফউদ্দিন ৭৭ রান খরচায় পেয়েছেন ৩ উইকেট। পাকিস্তানের অন্য উইকেটটি নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৬ রান করেছেন বাবর আজম।
বিপি।সিএস
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]