
সৈয়দপুরে পুত্রবধুর নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধ শ্বশুর!


এম আর আলী টুটুল, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: বৃদ্ধ শ্বশুড়কে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পিটিয়েছেন বউমা। ঘটনাটি ঘটেছে ১৯ ডিসেম্বর নীলফামারীর সৈয়দপুরের কামারপুকুর এলাকায়। ঘটনাস্থল থেকে জানা যায়, কামারপুকুর পশ্চিম আইসঢাল বানিয়াপাড়া গ্রামের পুলিশের এসআই আইয়ুব আলীর মেয়ে আফরোজার সাথে বিয়ে হয় পাশের গ্রাম বাগানবাড়ী হিন্দুপাড়ার কাছুয়া মামুদের ছেলে বিজিবিতে কর্মরত আতাউর রহমানের সাথে।
উল্লেখ্য, কাছুয়া মামুদ রেলওয়ের একজন অবসর প্রাপ্ত কর্মচারী। তিনি কাশিরাম বেলপুকুর এলাকা থেকে কামারপুকুরে জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেন। তার দুই ছেলে আফতাজুল ও আতাউর। বড় ছেলে আফতাজুলের কামারপুকুর বাজারে মোবাইল ফ্লাক্সি লোডের দোকান রয়েছে। আতাউর রহমান বিজিবিতে যোগদান করেন। চাকুরীর যাবতীয় টাকা তার বাবা কাছুয়া মামুদ বহন করেন। দুই ভাই বাবা মা সহ ভালই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু পাশের গ্রামের আইয়ুব পুলিশের মেয়ের সাথে আতাউরের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে ওই মেয়েকে বিয়ে করে বাড়ীতে নিয়ে আসলে বড় ভাই আফতাজুল বাধা দেয়। কারণ মেয়েটির পূর্বে বিয়ে হয়েছিল এবং একাধিক ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল। তাই বাধা দেন আফতাজুল। আফতাজুল বাধা দেওয়ায় পরও আতাউর ও কাছুয়া মামুদ ওই বউকে বাড়ীতে তোলেন এবং আফতাজুল কে বাড়ী হতে বের করে দেন।
পরবর্তীতে আফতাজুল অন্যস্থানে ভাড়া বাড়িতে উঠেন। এভাবে ২/৩ বছর কাটার পর কাছুয়া মামুদ বাড়িটি দুই ভাগে ভাগ করে পিছনের দিকে এক অংশ আফতাজুলকে দেন। আর কাছুয়া মামুদ আতাউরের সংসারে থাকেন। আতাউর রহমান চাকুরীর কারণে ঢাকায় অবস্থান করেন। স্ত্রী আফরোজা কাছুয়া মামুদ ও তার স্ত্রীকে চাকরের মত কাজ করান। কাছুয়া মামুদ অবসরের পর প্রতি মাসে পাওয়া সাড়ে ৭ হাজার টাকা আতাউরকে দেন। তারপরও আফরোজা প্রতিনিয়ত শ্বশুড় শ্বাশুড়ীকে নির্যাতন করে আসছিলেন। এছাড়া চাষাবাদের কাজগুলো কাছুয়া মামুদ নিজে করেন। শত কষ্ট হলেও তারা ওই বাড়ীতেই থাকেন। ঘটনার আগের দিন বউ শ্বাশুড়ীর মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে আফরোজা তার বোনকে ডেকে কাপড় সহ আসবাহ পত্র নিয়ে বাপের বাড়ীতে চলে যায়। ঘটনার দিন সকালে পূনরায় বাড়ীতে এসে ধান চুরি করেছে বলে শ্বশুড় শ্বাশুড়ীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এর প্রতিবাদ করলে আফরোজা পায়ের হিল ও হাত দিয়ে কাছুয়া মামুদ (৭০) কে কানের নিচে একাধিকবার মারডাং করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এসময় তার শ্বাশুড়িকেও মারডাং করার চেষ্টা করলে আশেপাশের লোকজন এসে বাধা দেয়। পরে আফরোজা ঘরে ঢুকে পরনের কাপড় ছিড়ে তাকে মারডাং করেছে বলে প্রচার করে। ঘটনাটি প্রকাশ হলে অনেক নারী পুরুষ কাছুয়া মামুদকে দেখতে আসেন এবং সবাই এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলেছেন আগে হতো নারী নির্যাতন, এখন হচ্ছে পুরুষ নির্যাতন। তবে সবাই ওই বউমার শাস্তি দাবী করেছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ বাবা পুলিশের এসআই ও স্বামী বিজিবি সদস্য হওয়ায় ওই নারী বেপরোয়াভাবে চলাফেলা করে। কান্নাজড়িত কন্ঠে কাছুয়া মামুদ বলেন, আমি এর বিচার আল্লাহকে দিলাম। আজ থেকে আতাউর ও তার স্ত্রীর সাথে কোন সম্পর্ক নেই। এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে কথা হয় বিজিবিতে কর্মরত আতাউরের সাথে তিনি জানান, এটি আমাদের পারিবারিক ব্যাপার। এ নিয়ে সাংবাদিকদের বাড়াবাড়ি করার কিছুই নেই।
বিপি/শাকিলা
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন





