গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম প্রধান। বুধবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শহরের গোহাটি এলাকায় নিজ কার্যালয়ে তিনি এই সম্মেলন করেন।
এ ছাড়া তিনি এসব অনিয়ম তুলে ধরে ওই কেন্দ্রের পুননির্বাচন চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগও দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদুল ইসলাম প্রধান লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ষষ্ঠ ধাপে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ওইদিন শিবপুর ইউনিয়নের ফজরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনায় ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়। মোটরসাইকেল ও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে।
ওই কেন্দ্রে সপ্তম ধাপে গত সোমবার (৭ ফেবব্রুয়ারি) পুনরায় ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। তিনি উল্লেখ করেন, ২৬ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আটটি কেন্দ্রে তিনি চার হাজার ৪১৬ ভোট পান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেকেন্দার আলী মন্ডল পান দুই হাজার ৬৭৫ ভোট। প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৭৯ ভাগ। এতে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে এক হাজার ৭৪১ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে থাকেন। কিন্তু গত সোমবারের নির্বাচনে ফজরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ
প্রার্থী দুই হাজার ১৫১ ভোট পান এবং তৌহিদুল ইসলাম পান মাত্র ২১ ভোট। কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৩৫৪টি। বিপুল ভোটে এগিয়ে থেকেও তিনি জাল ভোট প্রদান ও কারচুপির কারণে ৩৮৯ ভোটে পরাজিত হন বলে উল্লেখ করেন।
সম্মেলনে তৌহিদুল ইসলাম আরও বলেন, ২০১৯ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ হলেও প্রায় ১৪ থেকে ১৫ বছর আগে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে
ভোটার এলাকায় মৃত্যুবরণ ও চাকরি সূত্রে দূরে থাকার কারণে প্রায় ৯৫০ জন ভোটার ভোট দিতে আসেননি। অথচ প্রদত্ত ভোট দেখানো হয়েছে ২ হাজার ১৯৫টি। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন তাকে অবরুদ্ধ রেখে ভোটকেন্দ্র দখল করে। তারা প্রশাসনের উপস্থিতিতেই শতকরা ৯৩ ভাগ ভোট নিজের লোকজন দ্বারা নৌকা প্রতীকে সীল মেরে ভোট গণনার ফলাফল লিখে নেন। তাই তিনি শিবপুর ফজরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, ২৬ ডিসেম্বরের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা এই কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। তারা নিজের পরাজয় বুঝতে পেরে ভোটগ্রহন স্থগিত করতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। এই কারণ দেখিয়ে সেই দিনের ভোটগ্রহন কর্মকর্তারা ভোটগ্রহন স্থগিত করেন। এছাড়া নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মন্ডল দুদকের দায়ের করা ধর্মীয় সভার নামে ২২ কোটি টাকার চাল আত্মসাত মামলারও আসামি।
তাঁর পক্ষে নির্বাচনে কারচুপি করা কোনো বিষয় নয় বলে জানান তৌহিদুল ইসলাম প্রধান। এ বিষয়ে শিবপুর ফজরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, দুইজন নির্বাহী ম্যাজিষ্টেটের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন ছিল। জাল ভোট ও ভোটগ্রহনে কোনো কারচুপি হয়নি। মৃত্যুবরণ ও চাকরির কারণে ৯৫০ ভোটার বাইরে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। ভোটাররা কেন্দ্রে এসেছেন, তারা ভোট নিয়েছেন।
বিপি/কেজে