১৩ অক্টোবর ২০২৫

এরশাদকে নিয়ে বিদিশার আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাস

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
এরশাদকে নিয়ে বিদিশার আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাস

বাংলাপ্রেস রাজনীতি দপ্তর : সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর যে গুঞ্জন উঠেছে তা ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে জাতীয় পার্টি। রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় এবং লিভারের সমস্যার উন্নত চিকিৎসা নিতে গত রোরবার সিঙ্গাপুরে যান সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।

বিরোধী দলীয় এই নেতার মৃত্যুর গুঞ্জনকে গুজব বলছেন তার সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদও। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক এক পোস্টে মাধ্যমে বিষয়টি জানান তিনি। ফেসবুক পোস্টে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বাঁচতে দিতে অনুরোধ করেছেন বিদিশা।

বিদিশার পোস্টটি (ইংরেজি অক্ষরে বাংলায় লেখা) হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘উনাকে আরও কিছুদিন বাঁচতে দিন। এফবিতে (ফেসবুকে) দেখেছি উনাকে মেরে ফেলেছেন। বিশ্বাস করুন, উনি আরও কিছুদিন বাঁচতে চান আমাদের ছেলে এরিকের জন্য। উনি পৃথিবীতে এরিক ছাড়া বোধহয় আর কাউকে এতো ভালোবাসেননি। আমিও সব মাতৃত্বের লড়াই করার পরও ছেলেকে বাবা থেকে আলাদা করতে পারিনি।’

বিদিশা লেখেন, ‘সব থেকে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছি আমি আমার সন্তানকে কাছে না রেখে, চোখে না দেখে। তারপরও আমাকে পরম আনন্দ দেয় বাবা ছেলের খুনসুটি দেখে। কোনো শর্তের বন্ধন নেই। বাবা-ছেলের বয়সের পার্থক্যের পরও তাদের মধ্যে আড্ডা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক চোখে পড়ার মতো। ছেলেকে স্কুলে দিয়ে ও নিয়ে আসে একজন বৃদ্ধ পিতা। ছুটির দিনে বাবা-ছেলের একসঙ্গে ভ্রমণ।’

তিনি আরও লিখেন, রাতে এরিক ছাড়া উনি ঘুমাতে পারেন না একদম। তাই তো গত সপ্তাহে আমি যখন সিএমএইচ গেলাম দেখতে, দেখি নাস্তা করেন নাই, অপেক্ষায় আছে এরিকের। দুপুরে এরিক স্কুল থেকে ফিরলে লাঞ্চ করবেন বললেন। আমাকে সরি বললেন, অনেক অন্যায় হয়ে গেছে আমার সঙ্গে যা সংশোধন করার উপায় নেই। তা অন্য প্রসঙ্গ। অনেক স্মৃতি চারণ করলেন তিনি।’

‘বলেই ফেললেন, রাত জেগে এরিক নাকি বক বক করে, যা নাকি আমি করতাম এক কালে। উনি চোখ বন্ধ করলে এরিক নাকি চোখ খুলে দেয়, বলে আচ্ছা ড্যাডি এইবার তাহলে একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনাই, কিন্তু তুমি তো ঘুমাবে না আমার আগে। গান করতে করতে এরিক নিজেই ঘুমিয়ে পড়ে। আমিও নাকি একি কাজ করতাম অনেক বছর আগে। সেদিন উনার চোখে জল ছিল। জীবন মৃত্যুর এই শেষ সময়ে উনার উপলব্ধিগুলো নিশ্চয়ই মিথ্যা না।’

বিদিশা এরশাদ আরও লিখেন, চল্লিশ মিনিট আমার হাত উনার দুই হাত দিয়ে ধরে বসে ছিলেন। চোখ দিয়ে ঝরছিল জল আমাদের দুজনেরই। আমাদের দুইজনের মধ্যে সময়ের গ্যাপটা অনেক বেশি হয়ে গেছে এতদিনে, তাই উনার জীবনে শেষ সময়ে আমি কোনো সেবা করতে পারলাম না। উনি বললেন, আমি নাকি বেশি সোজা সাপ্টা, সাধা-সিধা ছিলাম, লম্বা হয়েছি, বুদ্ধি হয়নি আমার। আমি আরো খুশি আছি অল্প বুদ্ধিতে সোজাসাপ্টা সিম্পল জীবনে। রাজনীতি, প্যাচ ষড়যন্ত্র টেনশন নিয়ে ঘুমাতে হয় না আমার। সততার সাথে স্বল্প পরিশ্রমে আমার ফাউন্ডেশনটা চালাই তাতেই আমার শান্তি।’

‘দিনের শেষে রাতে এরিক এর কথা মনে হলে মায়াকে বুকে চেপে ঘুমাই আমি। উনিও মায়াকে ভালোবাসেন। বললেন, তোমার মতো মা থাকলে বাবা দরকার নেই। আমি শুধুই বললাম, “i wish our marriage wasn't so crowded". উনি আমার গালে আলতো করে কাঁপা কাঁপা হাতে স্পর্শ করে বললেন, “সরি”। এরিক আছে, মায়া আছে তোমার পাশে। আমার মনে হয়েছে উনি আরও কিছুদিন বাঁচতে চান উনার এরিকের জন্য শুধু। আমিও চাই আরও কিছুদিন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, আনন্দ উনি এরিকের কাছ থেকে নিয়ে যাক। যেটা একমাত্র এরিকই দিতে পারবে উনাকে, কারণ এরিক তো স্পেশাল চাইল্ড।’

বিপি/আর এল

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!